মঙ্গলবার | ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গোড়ালির হাড় বৃদ্ধিজনিত সমস্যায় তাসকিন

কাঁধের চোট পরিচর্যা করে তিন সংস্করণেই খেলে যাচ্ছিলেন তাসকিন আহমেদ। ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন তিনি। কঠোর পরিশ্রম আর অধ্যবসায় দিয়ে নিজেকে দেশের সেরা পেস বোলার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ভালো খেলার পুরস্কারও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘এ’ প্লাস ক্যাটেগরি পেয়েছেন তিনি।

৩০ বছর বয়সী এ ফাস্ট বোলারের স্বপ্ন যখন আকাশছোঁয়া, সে মুহূর্তে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাঁ-পায়ের গোড়ালির হাড়ের বৃদ্ধি। বেশির ভাগ সময়ই ব্যথা নিয়ে ম্যাচ খেলতে হয় তাসকিনকে। সমস্যা বড় হওয়ায় বিকল্পও ভেবে রাখতে হচ্ছে বিসিবির মেডিকেল বিভাগকে। টাইগার ফাস্ট বোলারের গোড়ালির সমস্যার গভীরতা নির্ণয়ে গতকাল এমআরআই করা হয়েছে।

পেস বোলারদের ল্যান্ডিং পায়ের গোড়ালির হাড় বৃদ্ধি স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখেন ফিজিশিয়ানরা। গোড়ালির একিলিস টেন্ডনের নিচের দিকের হাড় বেড়ে থাকে।

বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরীর মতে, ‘বছরের পর বছর বোলিং করার কারণে পেস বোলারদের গোড়ালির হার বাড়তে পারে। সবারই কম-বেশি বাড়ে। এ কারণে গোড়ালিতে ব্যথা হওয়ার ঘটনা কম। যেটা সাধারণত ঘটে না, সেটাই হয়েছে তাসকিনের ক্ষেত্রে। ম্যাচ খেললে ব্যথা হয় তার। বিশ্রাম নিলে ব্যথা থাকে না। আলট্রাসনোগ্রাম করে হাড় বৃদ্ধির বর্তমান অবস্থান আমরা দেখেছি। এমআরআই করা হয়েছে বিকল্প ভাবনা থেকে। মেডিকেলি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন হলে যেন এমআরআই রিপোর্ট বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো সম্ভব হয়, সে জন্য করা।

গোড়ালির হাড়ে অস্ত্রোপচার জটিল প্রক্রিয়া বলে জানান দেবাশীষ। দেশে কোনো ক্রীড়াবিদের গোড়ালির হাড়ের এ ধরনের সমস্যা সমাধানে অস্ত্রোপচার করার রেকর্ড নেই বলে দাবি তাঁর।

তিন মাস আগে বাঁপায়ের গোড়ালির ব্যথার কথা বিসিবির চিকিৎসকদের জানান তাসকিন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে হাড় বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। চোট পরিচর্যা এবং ‘ওয়ার্ক লোড’ নিয়ন্ত্রণে রেখে খেলার পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। জাতীয় দলের ফিজিও বায়েজিদুল ইসলাম খান ‘রিহ্যাব’ প্রক্রিয়া দেখভাল করেন।

এ ব্যাপারে দেবাশীষ চৌধুরীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তাসকিনকে প্রোগ্রাম দেওয়া আছে আগে থেকেই। এ কারণে ঢাকা লিগে সে তিনটি ম্যাচ খেলেছে। ঈদের পর কোনো ম্যাচ খেলেনি। বিশ্রামে থাকতে হয়েছে ব্যথামুক্ত হতে। মূলত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার জন্যই লিগে কম খেলেছে। টেস্ট খেলার ক্ষেত্রেও তাকে বেছে বেছে খেলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

গতকাল পর্যালোচনা শেষে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের ইতিবাচক বার্তাই দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। টেস্ট খেলার ব্যাপারে তাসকিনের আপত্তি নেই। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন তাসকিন।

বাংলাদেশ এ বছর খুব বেশি টেস্ট না খেললেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ঠাসা সূচি। ২০ এপ্রিল জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে শুরু হবে মৌসুম। মে মাসে পাকিস্তানে খেলবে পাঁচ ম্যাচ টি২০ সিরিজ, জুন-জুলাইয়ে শ্রীলঙ্কা সফরে হবে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ। জুলাই-আগস্টে হোমে টি২০ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এর পরই হোম সিরিজ হবে ভারতের বিপক্ষে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষেও খেলতে হবে তাসকিনদের। স্বাভাবিকভাবেই নিজেকে ফিট রাখতে বিশ্রাম নীতিতে যেতে হতে পারে তাঁকে।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.