নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজা ও রাফায় ইসরায়েলের বর্বরোচিত নৃশংসতার প্রতিবাদ ও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আয়োজনে প্রতিবাদ ও সংহতি র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এ লক্ষে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে মহানগরীর বাটার মোড়ে সমবেত হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। র্যালি ও সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এরশাদ আলী ঈশার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র সদস্য ও সাবেক সংসদ সংসদ্য রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, সদস্য সচিব মামুন-অর-রশিদ মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক আসলাম সরকার, ওয়ালিউল হক রানা, শফিকুল ইসলাম শাফিক, জয়নুল আবেদীন শিবলী ও বজলুল হক মন্টু, জেলা বিএনপি’র সদস্য তোফায়ের হোসেন রাজু, রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শরিফুল ইসলাম জনি, সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান স্বজন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল সরকার ডিকো, যুগ্ম আহ্বায়ক রবিউল ইসলাম কুসুম।
আরো উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মীর তারেক, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরফিন কনক, সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান জনি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাহরিয়ার আমিন বিপুল, রাজশাহী মহানগর কৃষক দলের আহ্বায়ক শরফুজ্জামান শামীম, রাজশাহী মহানগর মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট রওশন আরা পপি, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সকিনা খাতুন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি এডভোকেট সামসাদ বেগম মিতালী ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা রুমেনা হোসেন, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রুকুনুজ্জামান আলম, মহানগর শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম পাখি ও সাধারণ সম্পাদক রফিকউদ্দিন, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি, সাধারণ সম্পাদক মাকুসুদুর রহমান সৌরভ, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরকার শামীম, সদস্য সচিব আলামিন সহ বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিশ্ব বিবেককে স্তম্ভিত করে ফিলিস্তিনের রাফা ও গাজায় চলছে ইতিহাসের বর্বরতম নৃশংস হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ। বিরামহীন ইসরায়েলি বিমান আক্রমণ আর স্থলভাগে তাদের সেনাবাহিনীর উপর্যুপরি হামলায় রাফা ও গাজায় সকল স্থাপনা ধূলিসাৎ। নির্বিচার এই আক্রমণ থেকে নারী, শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ-কেউই রেহাই পাচ্ছেনা। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে মৃত ও আহতদের সংখ্যা। মৃতদেহ কবরস্থ করার মতো সামান্য ভূখণ্ড পর্যন্ত বর্তমানে অবশিষ্ট নেই। সেখানে অবিরাম বিমান আক্রমণ আর বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে টিকে থাকা মানব বসতির শেষ চিহ্নটুকু।
তিনি আরো বলেন, মসজিদে প্রার্থনারত মানুষ কিংবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরাও এখন নিরাপদ নয়। সেখানে নির্বিচার বোমা হামলায় নিমিষেই তাদের জীবনাবসান ঘটছে। বুঝতে কষ্ট হয় না যে ইসরায়েলি হামলার একমাত্র লক্ষ্য-পৃথিবীর মানচিত্র থেকে রাফা ও গাজা নামের জনপদকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। গত ৭৫ বছর ধরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা তাদের মাতৃভূমি ফিরে পাওয়ার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের নির্যাতিত ও প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর আজও বিশ্ব বিবেককে জাগ্রত করতে পারেনি। নিজ আবাসভূমিতে তারা আজ উদ্বাস্তু। নিরীহ নারী ও শিশুদের মৃত্যুর মিছিল মানবতাকে পারেনি সোচ্চার করতে। শুধু এবারের ইসরায়েলি আক্রমণেই মৃত্যুর সংখ্যা ৪৮ হাজার অতিক্রম করেছে বলে উল্লেখ করেন তিণি
তিনি আরো বলেন, আজ গাজাই পিতৃ-মাতৃহীন অনাথ শিশু আর বিধবার সংখ্যা পরিমাপযোগ্য নয় এবং প্রতিদিনই বাড়ছে এই সংখ্যা। মাথা গোঁজার আশ্রয় তো দূরের কথা, একবেলা খাবার, চিকিৎসা কিংবা তৃষ্ণা নিবারণের সামান্য পানিও আজ তাদের কাছে দুষ্প্রাপ্য। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ইতিহাসের জগন্যতম এই গণহত্যার ঘটনায় বিশ্ব বিবেক নিরব, জাতিসংঘসহ মানবাধিকার নামধারী সংস্থাগুলোর দায়িত্ব আজ কেবল সংবাদ সম্মেলন আর বিবৃতির মাঝেই সীমাবদ্ধ। এবারের রমজান মাস এই অঞ্চলের জন্য ছিল বিভীষিকাময়। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মসজিদ থেকে ভেসে আসেনি আজানের ধ্বনি-তার। পরিবর্তে সারারাত শোনা গেছে বোমা আর রকেট শেলের বিস্ফোরণের শব্দ।
ইফতারের সময় খুব কষ্টে জুটেছে পানের অযোগ্য নোংরা পানি। এই অবিশ্বাস্য মানবিক বিপর্যয়ের মুহূর্তে সচেতন মানুষ হিসেবে নিশ্চুপ থাকলে তা হবে মানবতার অপমান। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সংঘাত নয়, শান্তিতে বিশ্বাসী একটি রাজনৈতিক দল। একই সঙ্গে নির্যাতিত ও অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে রয়েছে দৃঢ় অবস্থান। আজ বিশ্ববাসীর উচিত, সম্মিলিত প্রতিবাদের মাধ্যমে এই নৃশংস পৈশাচিক ধ্বংসযজ্ঞের অবসান ঘটানো। একমাত্র ঐক্যবদ্ধ মানবিক করস্বরে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদই পারে রাফা ও গাজার অসহায় মানুষের প্রতি সংঘটিত এই বর্বরতার অবসান ঘটাতে।
বক্তব্য শেষে বাটার মোড় থেকে সংহতি র্যালি বের করা হয়। র্যালি নিয়ে তারা মহানগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে র্যালি শেষ করেন। এসময়ে তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকে।