বুধবার | ২৫শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ১৬৮তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উদযাপন

রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির আয়োজনে সাঁওতাল বিদ্রোহের মহানায়ক সিধু-কানু’র স্মরণে ১৬৮তম সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে শুক্রবার (৩০ জুন) দুপুরে কাকনহাট পৌরসভা অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও একাডেমির নির্বাহী সদস্য আকবারুল হাসান মিল্লাত।

রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা বেনজামিন টুডু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নির্বাহী পরিষদের সদস্য শেলী প্রিসিল্লা বিশ্বাস, সিসিবিভিও রাজশাহীর সমন্বয়কারী আরিফ ইথার, গোদাগাড়ী থানা পারগানা বাইসি’র থানা পারগানা বাবুলাল মুরমু, আদিবাসী মুক্তিমোর্চা রাজশাহী মহানগর শাখার সভাপতি ভাদু বাস্কে ও গোদাগাড়ী রক্ষাগোলা সমন্বয় কমিটি’র নেতা সিষ্টি টুডু।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বেনজামিন টুডু বলেন, ১৮৫৫ খ্রীষ্টাব্দের সাঁন্তাল বিদ্রোহ ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এবং বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে হাজারও সাঁন্তালদের রক্তে লেখা এক অনন্য ইতিহাস। কোন একটি সাধারণ কারণে এই বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়নি। বরং সুনির্দিষ্ট বেশ কিছু কারণে এই গণ-সংগ্রাম সংঘটিত হয়েছিল।

সাঁন্তাল বিদ্রোহ ছিল মূলত: তৎকালীন সময়ের সুদখোর মহাজন, ফড়িয়া ব্যবসায়ী এবং অতিলোভী জমিদারদের অমানবিক অত্যাচার, জুলুম, নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে এক স্বোচ্চার প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ ও বিদ্রোহের আগুন ভারতের ভাগলপুর, বীরভূম এবং আশেপাশের সাঁন্তাল ও আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় দাউ দাউ করে জ্বলে উঠেছিল।

প্রধান অতিথি বলেন, তৎকালীন ভারতবর্ষের বৃটিশ শাসক লর্ড ডালহৌসির মতে, “এই বিদ্রোহের অন্যতম প্রধান কারন ছিল “বিত্তবান উচ্চবর্ণের হিন্দুরা নিরীহ, সৎ, সহায়-সম্বলহীন, নিরক্ষর সাঁন্তালদের যুগ যুগ ধরেই নানাভাবে শোষন ও অত্যাচার করে আসছিল। এরা সাঁন্তলদের ক্রীতদাসে পরিণত করার মানসে নানা রকম ফাঁদ পেতেছিল।” এ অবস্থা থেকে সাঁন্তালসহ আদিবাসী সখল জাতীতে এদের কবল থেকে রক্ষা করতে এবং ব্রিটিশদের নির্যাতন ও শোষন থেকে মুক্তি পেতে এই আন্দোলন তারা করে ছিলেন তিনি উল্লেখ করেন।

বক্তব্য শেষে আদিবাসী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোত্রের নাচ পরিবেশন করা হয়। শেষে সকল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.