ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ নামের একটি তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণে চারজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন জাহাজের চার শ্রমিক। আহতদের মধ্যে দুজনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং দুজনকে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে অক্ষত অবস্থায় তীরে ফিরেছেন বাবুর্চি বেলায়েত (৪৫)।
শনিবার দুপুর দুইটার দিকে ঝালকাঠি পৌরসভার সামনে খেয়াঘাটে সুগন্ধ্যা নদীতে তেলবাহী জাহাজে বিস্ফোরণে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিটের প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিদগ্ধ চারজন নদীতে ঝাঁপ দিলে স্থানীয় ট্রলার চালকরা তাদের উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠায়। জাহাজের অপর ৪ জন স্টাফ নিখোঁজ রয়েছেন। বিকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জাহাজটি আস্তে আস্তে পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী, প্রত্যক্ষদর্শী ও ঝালকাঠি থানার ওসি নাসির উদ্দিন সরকার জানান, শনিবার দুপুর দুইটার দিকে জাহাজের ইঞ্জিন রুমে বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ওই রুমে অগ্নিকাণ্ডের সৃষ্টি হয়। এতে মাস্টার ব্রিজটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে জাহাজের ৯ স্টাফের মধ্যে চারজন শ্রমিক দগ্ধ হন।
দগ্ধরা হলেন, জাহাজের স্টাফ শাকিল (৩৫), ফরিদুল ইসলাম (৫০), ইকবাল হোসেন (২৭) ও মাইনুল ইসলাম হৃদয় (২৯)। মাস্টার ব্রিজের বাইরে থাকা বাবুর্চি বেলায়েত হোসেন (৪৫) নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণে রক্ষা পায়। বাবুর্চি বেলায়েত হোসেন বলেন, জাহাজে মোট ৯ জন স্টাফ ছিলেন। চারজন এখনো নিখোঁজ আছেন।
ঝালকাঠি পদ্মা অয়েল কোম্পানির ডিএস হোসেন আহম্মেদ জানান, ওটি সাগর নন্দিনী-২ জাহাজটি প্রায় ১১ লাখ লিটার পেট্রোল এবং ডিজেল নিয়ে গত বুধবার চট্টগ্রাম থেকে এসে ঝালকাঠির পদ্মা অয়েল কোম্পানির সামনে সুগন্ধ্যা নদীতে নোঙর করে।
শনিবার বিকালে জাহাজটি দিয়ে তেল খালাস করার কথা ছিল। শনিবার দুপুরে ইঞ্জিন রুমে বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে জাহাজটির ইঞ্জিন রুমের তলা ফেটে আস্তে আস্তে জাহাজটি ডুবে যাচ্ছে।
২০২১ সালের ১২ নভেম্বর ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা নদীতে একই কোম্পানির জাহাজ সাগর নন্দিনী-৩ এ অগ্নিকাণ্ডে সাতজন নিহত হয়েছিল।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, তেলবাহী জাহাজে অগ্নিকাণ্ডে চারজন আহত হয়েছেন। নিখোঁজ চারজনের সন্ধানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ।