মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাস্থ্যসেবা খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে চান মেয়র লিটন

স্টাফ রিপোর্টার: কর্মমূখী স্মার্ট নগরী গড়ে তুলতে ছয়টি ক্যাটাগরিতে ৯৯ দফার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। শনিবার ১১ টার দিকে

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষনা করেন তিনি।

ইশতেহার ঘোষনার সংবাদ সম্মেলনে ২০১৮ সালে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর পাঁচ বছরের তার উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি আগামীতে নির্বাচিত হলে পুনরায় ব্যাপক কর্মসংস্থান এবং বেকারত্ব হ্রাস ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি, অর্থনৈতিক, সামাজিক, মানবিক, শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলাসহ স্বাস্থ্যসেবার প্রতি জোর দেন।

তিনি স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে কি ধরনের উন্নয়ন করতে চান তা তুলে ধরে বলেন, সারাবিশ্ব করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য পরিসেবার সীমাবদ্ধতা ইঙ্গিত করে গেছে। বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলা থেকেই চিকিৎসা নিতে মানুষ ছুটে আসেন এই শহরে।

এই বিশাল জনপদের মানুষের আশা ভরসার স্থান রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এই ক্ষেত্রে দিন দিন চাপ বাড়ছে, চিকিৎসাসেবার প্রাতিষ্ঠানিক সম্প্রসারণ ও নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সময়ের দাবি। চিকিৎসাব্যবস্থা উন্নত না করলে আধুনিক উন্নত চিকিৎসা নিতে মানুষ পার্শ্ববর্তী দেশ বা অন্যান্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। অথচ প্রতিবছর এই নগরীর মেডিকেল কলেজসমূহ থেকে শত শত ডাক্তার এম.বি.বি.এস সনদ পাচ্ছেন। তাদের উচ্চশিক্ষা, গবেষণা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করতে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা প্রসারিত হয়নি।

আমি দেশি ও বিদেশি সংস্থাকে সম্পৃক্ত করে এই খাতকে আরো সমৃদ্ধ করতে চাই। মানুষ যেন নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, নিরাপদ খাদ্য, নিরাপদ পানি এবং পরিসেবা পায় তার জন্য আমার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা খাতে নিম্নোক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।

১. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে যুগপোযোগী করে গড়ে তোলা হবে।
২. নবনির্মিত শিশু হাসপাতালটি দ্রুত চালু করে শিশু চিকিৎসা উন্নত করা হবে।
৩. সিটি হাসপাতালের আধুুনিকায়নের মাধ্যমে নগরীর পূর্বাঞ্চলের নাগরিক ও শিশুদের চিকিৎসা সেবা উন্নত করা হবে।
৪. ওয়ার্ডভিত্তিক আরবান হেলথ কেয়ার বা নগর স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৫. নাগরিকগণের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অনলাইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হবে।

৬. রাজশাহীস্থ হার্ট ফাউন্ডেশনকে একটি পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ হাসপাতালে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
৭. সাধারণ রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার লক্ষ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া সদর হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে উন্নীত করে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

৮. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ সুবিধা সম্প্রসারণ করা হবে।
৯. রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নতমানের সেবার জন্য আধুনিক কেবিনের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সকল সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হবে।

১০. রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কার্ডিওলজি ইউনিটের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এনজিওগ্রাম, পেসমেকার স্থাপন, কালার ড্রপলারসহ সকল আধুনিক সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেয়া হবে।

১১. রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ ক্যানসার হাসপাতাল স্থাপন করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
১২. আধুনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে একটি স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।

১৩. রাজশাহী হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজের সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৪. একটি পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।

১৫. কার্ডিও ভাসকুলার ও গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি চিকিৎসা হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হবে।
১৬. ফরমালিনমুক্ত ও নিরাপদ খাদ্য বাজারব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

১৭. বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করা হবে। আধুনিক বর্জ্য রিসাইকেলিং প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমে নগরীর ডাম্পিংকৃত বর্জ্য অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে। নতুন একটি ডাম্পিং স্টেশন ও রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট নগরীর উত্তর প্রান্তে স্থাপনের জন্য প্রকল্প জমা দেয়া হয়েছে।

১৮. নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় ১২টি পাবলিক টয়লেট বা গণশৌচাগার নির্মাণ ও আধুনিকায়ন করা হবে।

ইশতেহার ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের উপদেষ্ঠা পরিষদের সদস্য প্রফেসর আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও বিএমডিএর চেয়ারম্যান আক্তার জাহান, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি লিয়াকত আলী লিকুসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতৃত্ববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.