ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, কিউবা থেকে চীনের গোয়েন্দাগিরির নতুন প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। অথচ আমেরিকার ফ্লোরিডা থেকে মাত্র ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দ্বীপদেশটি।
প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যমটির এমন প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেছেন, চীন বেশ কিছু দিন ধরেই কিউবা থেকে গোয়েন্দাগিরি করছে। সেখানে তাদের তথ্য সংগ্রহের সুযোগ-সুবিধা আরও অত্যাধুনিক করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের বৃহস্পতিবারের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বীপদেশ কিউবায় একটি ইলেকট্রনিক আড়ি পাতা কেন্দ্র স্থাপনে গোপন চুক্তিতে পৌঁছেছে দুই দেশ।
তবে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা সরকার উভয়ই ওই প্রতিবেদনের ব্যাপারে ঘোরতর সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
বাইডেন প্রশাসনের ওই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, গণমাধ্যম যা বলছে, ‘সেটা আমাদের জানা-বোঝার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’। অবশ্য প্রতিবেদনের কোথায় ভুল বা দুর্বলতা আছে কিংবা চীন কি সত্যিই কিউবায় আড়ি পাতার কেন্দ্র স্থাপনের চেষ্টা করছে কি না- এসব নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
অবশ্য মার্কিন ওই কর্মকর্তা বলছেন, কিউবা থেকে চীনের গোয়েন্দাগিরির বিষয়টি জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগেকার বিষয়। ওই সময় বিশ্বজুড়েই তার তথ্য সংগ্রহ কাঠামো শক্তিশালী করছিল বেইজিং।
তিনি বলছেন, এটা চলমান ইস্যু, নতুন কিছু নেই। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন ২০১৯ সালে কিউবাতে তাদের তথ্য সংগ্রহ কেন্দ্রগুলোর আধুনিকায়ন করেছে। এটা আমাদের গোয়েন্দা রেকর্ডে ভালোভাবেই সন্নিবেশিত আছে।
রয়টার্সের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীন দূতাবাসের এক কর্মকর্তার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনো মন্তব্য না করে তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের দেওয়া বক্তব্য দেখতে অনুরোধ করেন।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তার ওই মন্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যাকার সাম্রাজ্য’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন। সেই সঙ্গে কিউবায় গুপ্তচর কেন্দ্র নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে ওয়াশিংটন ‘গুজব ছড়াচ্ছে ও অপবাদ দিচ্ছে’ বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এদিকে বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তার মন্তব্য নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিউবা সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
অবশ্য দেশটির সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস ফার্নান্দেজ দে কোসিও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনকে ‘পুরোপুরি অসত্য’ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। বরং তিনি উল্টো দাবি করে বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র কিউবার ওপর কয়েক দশক ধরে যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে, সেটাকে ন্যায্যতা দিতেই এসব বানোয়াট কথাবার্তা বলছে ওয়াশিংটন।