প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে-দেবে একাকার হয়ে গেছে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সদ্য মেরামত করা একটি সড়ক। মেরামতের কাজ শেষ হওয়ার মাত্র ১০ দিনের মাথায় এই বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
গত তিন দিনের বৃষ্টির পানিতে কার্পেটিংয়ের পিচ ধুয়ে বিলীন হয়ে ওই সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গাড়ির চাকার সঙ্গে উঠে যাচ্ছে সড়কের পিচ।
এতে ওই সড়কে কোনো প্রকার যানবাহন তো দূরের কথা, হেঁটে চলাও দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুর্নীতি করে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে ওই কাজ করায় রাস্তাটির এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ সেখানকার বাসিন্দাদের।
জানা গেছে, উপজেলা সদর থেকে স্বরূপকাঠি-কৃত্তিপাশা সড়কের সেতু, কালভার্টসহ পুনর্নির্মাণ কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম এম বিল্ডার্স কাজগুলো করছে।
ওই সড়কে স্বরূপকাঠি-জগন্নাথকাঠি নাম দিয়ে আবার মেরামত করার প্রকল্প নেওয়া হয়। সড়কের শুরুতেই স্বরূপকাঠি থেকে জগন্নাথকাঠি পর্যন্ত ৪০০ মিটার অংশে ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তার মেরামতকাজের প্রাক্কলন নেওয়া হয়। কাজের মূল ঠিকাদার মাইনুদ্দীন বাশি। তার কাছ থেকে শুভ নামের একজন উপ-ঠিকাদার কাজটি কিনে নিয়ে সম্পাদন করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি চলমান কাজের ওপর মেরামত প্রকল্পের নামে জুন মাসের শেষ দিকে মেরামতকাজ সন্দেহজনক। ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগের কিছু লোকের যোগসাজশে রাস্তা মেরামতের নামে ২৬ লাখ টাকার হরিলুট হয়েছে বলে অভিযোগ তাদের।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান ভুইয়া বলেন, ‘আমাদের এই সড়ক এক যুগেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত ছিল। সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু হলে আমরা বেশ আনন্দিত হই। কিন্তু কাজের শুরুতেই নানা ধরনের অনিয়ম করে ঠিকাদার, এমনকি রাতের আঁধারে ঢালাই কাজ শুরু করে।
এতে এলাকাবাসী বাধা দিলে তারা পরদিন কোনো রকমে তড়িঘড়ি করে পিচঢালাই শেষ করে রাতেই চলে যায়।’
স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, ‘কাজের মান খুবই খারাপ হচ্ছিল জানতে পেরে আমিসহ আমার কাউন্সিলরদের নিয়ে কাজের স্থানে গেলে উপ-ঠিকাদার কাজের মান সঠিকভাবে করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু তারা যেনতেনভাবে কাজ করে রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’
এ ব্যাপারে পিরোজপুর সড়ক বিভাগের নেছারাবাদ উপজেলার দায়িত্বে থাকা সুপারভাইজার রতন মিস্ত্রি বলেন, ‘কাজের শুরুতে আমি দুই দিন উপস্থিত ছিলাম। পরে অসুস্থ থাকায় কাজের সাইটে আর যেতে পারিনি।’
বিষয়টি নিয়ে পিরোজপুর সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম জানান, ৪০০ মিটার কার্পেটিং সড়কের মেরামতের জন্য সম্ভবত ২৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছিল। মাইনুদ্দীন বাশি ওই কাজের মূল ঠিকাদার। তার কাছ থেকে সাবকন্ট্রাক্ট নিয়ে শুভ নামের এক লোক ওই কাজ করেছেন। যদিও কাজের বিল দেওয়া হয়ে গেছে, তার পরও কাজ যদি খারাপ হয় তাহলে প্রয়োজনে ঠিকাদার আবার ওই কাজ করে দেবেন।
নিম্নমানের কাজ করে বিল উঠিয়ে নেওয়ার পরও কিভাবে তারা আবার কাজ করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঠিকাদারের সিকিউরিটি মানি জমা আছে। কাজ খারাপ হলে চাপ প্রয়োগ করে প্রয়োজনে তাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া হবে। সূত্রঃ কালের কণ্ঠ।
প্রি/রা/শা