তীব্র রৌদ্রময় দিন কিংবা ঝুমবৃষ্টিতে ছাতা প্রয়োজন বটে। কখনও কখনও ছাতা প্রিয়জনও হয়ে ওঠে। আজকাল ছাতাকে শুধু প্রয়োজন বললে ভুল হবে।
তীব্র রৌদ্রময় দিন কিংবা ঝুমবৃষ্টিতে ছাতা প্রয়োজন বটে। কখনও কখনও ছাতা প্রিয়জনও হয়ে ওঠে। আজকাল ছাতাকে শুধু প্রয়োজন বললে ভুল হবে। এটি হয়ে উঠেছে ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ছাতা ব্যবহার করছেন অনেকে। ডিজাইনাররা ছাতায় করছেন বিভিন্ন নকশা।
আজকাল স্বচ্ছ ছাতাও ট্রেন্ডে আছে। চীনে সর্বপ্রথম ছাতার আবিষ্কার হয়। আনুমানিক ৩ হাজার বছর আগে চীনারা আবিষ্কার করলেও ধীরে ধীরে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কোরিয়ানদের মধ্যে। এর পর বিশ্ববাসীর কাছে ছাতা এখন প্রয়োজনের সঙ্গী ছাতার নকশা: নীল, লাল, সবুজ, হালকা কমলা, বেগুনি রঙের ছাতায় বিভিন্ন ধরনের নকশা দেখা যায়। কখনও ছাতায় থাকে জ্যামিতিক প্যাটার্ন, পাতার প্রিন্ট, পলকা ডট প্রিন্ট, আবার কখনও থাকে মাকড়সার জালের মতো প্রিন্ট কিংবা স্পাইডারম্যান। ছোটদের ছাতায় কার্টুন চরিত্রও ফুটিয়ে তোলা হয়।
বিভিন্ন রঙিন নকশার ছাতার ভিড়ে আবেদন হারায়নি একরঙা ছাতাও। এখন একরঙা ছাতার ওপর পুঁতি ও জরির কাজও লক্ষ্য করা যায়।ছাতা এখন ফ্যাশনের অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। বাড়তি সৌন্দর্যের জন্য একরঙা ছাতা কিনে তার ওপর রঙিন নকশা এঁকে নেওয়া যায়। এর জন্য প্রয়োজন হয় সাদা স্প্রে রং, পারমানেন্ট মার্কার, অ্যাক্রিলিক কালার, প্রয়োজনীয় তুলি, ব্রাশ এবং ট্রান্সপারেন্ট অ্যাক্রিলিক স্প্রে। চাইলে নিজের পছন্দমতো সাজিয়ে নিতে পারেন ছাতার ডিজাইন।ছাতার প্রকারভেদ রয়েছে। মেয়েদের ছাতাগুলোতে একটু কারুকাজ থাকে।
এই ছাতাগুলো রঙিন হয়। ছেলেদের জন্য যে ছাতা তৈরি করা হয়, সেগুলোতে তেমন বিশেষ নকশা থাকে না। ছাতার উপকরণ: হাত ধরে রাখার অংশকে বলা হয়, ছাতার বাঁট। এটি সাধারণত অ্যালুমিনিয়াম ও কাঠ দিয়ে তৈরি হয়।
এ ছাড়া ছাতার ওপরের অংশে থাকে কাপড়ের ঢাকনা। নানা রং এবং ডিজাইনের হয়ে থাকে ছাতার এই ঢাকনা। কাপড়ের ভেতরের অংশে থাকে শিকের ফ্রেম। ছাতা কেনার আগে শিকগুলো মজবুত আছে কিনা তা দেখে নেওয়া জরুরি। ছাতা কেনার সময় যাচাই-বাছাই করে কেনা ভালো। দাম, নকশা এবং টেকসই কিনা– এসব দেখে ছাতা কেনা উচিত।
এদিক থেকে শংকর, রহমান, অ্যাটলাস, ফিলিপস, আলম, শরীফ ইত্যাদি বাংলাদেশে নামকরা ছাতার ব্র্যান্ড।প্রাপ্তিস্থান: ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া এলাকাসহ সব শহর, উপশহর এমনকি স্থানীয় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরেও ছাতা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনলাইন মার্কেট প্লেসে মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ছাতা। অনলাইন থেকে ভাঁজযুক্ত কিংবা ক্যাপসুল ছাতা কিনতে পারবেন অনায়াসে।
ছাতার দাম: সময় ও মার্কেটের ওপর ভিত্তি করে ছাতার দামের ভিন্নতা দেখা যায়। তবে ব্র্যান্ডের ছাতাগুলোর দাম সব ক্ষেত্রে প্রায় সমান। সাধারণত ১৫০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকার মধ্যে ছাতা পাওয়া যায়। দুই ভাঁজের ছাতার দাম ২০০ থেকে ৬০০ টাকা ও তিন ভাঁজের ছাতা ৩৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা হয়ে থাকে। শিশুদের জন্য কার্টুন-সংবলিত ছাতার দাম ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং ভাঁজহীন দেশি ছাতার দাম ১৫০ থেকে ৫৫০ টাকা।
ক্যাপসুলের মতো বক্সে বন্ধ করে রাখা যায় এমন ছাতার দাম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকার মধ্যে। ছাতা কেনার আগে: শুধু ফ্যাশনেবল বিষয়টি মাথায় রেখে ছাতা কিনবেন না। ফ্যাশনেবল ছাতাগুলো খুব টেকসই হয় না। ছাতা কিনতে হবে কাপড় দেখে। ছাতার হাতল শক্ত ও মজবুত কিনা তাও দেখে নিন।ছাতার নিচে সাদা ও ধূসর রঙের প্রলেপ আছে কিনা তা দেখে নিন। সাদা ও ধূসর প্রলেপ তাপ প্রতিরোধী হয়।ছাতার বাটন ঠিকমতো কাজ করে কিনা দেখে নিন। ছাতার ভেতরের সব শিক ঠিক আছে কিনা তা পরখ করে নিন।
ছয় কিংবা আট শিকের ছাতা না কিনে ১০ শিকের ছাতা কিনতে পারেন। এগুলো তুলনামূলক মজবুত হয়। অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি শিকের ছাতা বেশি মজবুত হয়। ভীষণ ঝড়ে উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে না। এ ছাড়া এ ধরনের ছাতায় সহজে মরিচা ধরে না।