নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীতে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা সেন্টারে (আই-ভ্যাক সেন্টার) প্রবেশ করে ইনচার্জসহ অফিসের সদস্যদের হুমকি-ধামকি এবং ভিসা দেয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভিসা সেন্টার কর্তৃপক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার ওই নারীকে গ্রেপ্তার করে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে তাকে প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃত ওই নারীর নাম নুরুন্নাহার খাতুন মিলি। তিনি রাজশাহী নগরীর উপশহর নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত রাফি টুরস এ্যন্ড ট্রাভেল্সের স্বত্বাধিকারী এবং উপশহর এলাকার সেক্টর নং-১ এর একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন।
বোয়ালিয়া থানার ওসি সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, মহানগরীর বর্ণালীর মোড়ে অবস্থিত ভারতীয় ভিসা সেন্টারের ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা গ্রেপ্তার মিলির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ভিসা পেয়ে দেয়ার নাম করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে একাধিক সেবাগ্রহীতার।
সেবাগ্রহিতাদের অভিযোগ, গ্রেপ্তার নারী অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ভারতীয় ভিসা করিয়ে দেওয়াসহ ভারতীয় হাসপাতালের রোগী পাঠানোর কাজ করে থাকেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেবাগ্রহীতারা তার কাছ থেকে প্রতারিত হয়েছেন। এবিষয়ে কোন কথা কলতে গেলে ওই সব সেবাগ্রহীতাদের নারী দিয়ে ফাঁসিয়ে দেওয়া হতো। এই ভয়ে কেউ কোন অভিযোগ করতে সাহস পেতো না।
ভারতীয় ভিসা সেন্টারের ইনচার্জ বিপ্লব কুমার সাহা বলেন, কিছুদিন আগে রাজশাহী ভিসা সেন্টারে একজন আবেদনকারী তার পরিবারের মোট তিনটি ভিসার কাগজপত্র নিয়ে আসেন। আমরা তার আবেদনপত্র অনলাইনে যাচাই বাছাই করে দেখি তিনি আবেদনের নির্ধারিত ফি জমা না দিয়েই এসেছেন। তাকে বিষয়টি অবগত করা হয়।
এসময় তিনি আরো জানান, স্থানীয় একটি টুরস এ্যন্ড ট্যাভেলসের এক নারীর মাধ্যমে তিনি অনলাইনে ভিসার ফি পরিশোধ করেছেন। ভারতীয় তিনটি ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি ২ হাজার ৫২০ টাকা। সেখানে ওই আবেদনকারীর কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ টাকা। অথচ ওই আবেদনকারীর কোন টাকাই পরিশোধ করা হয়নি। আবেদনকারী উল্টো আমাদেরকে সন্দেহ করেন। আমরা বুঝতে পারি আবেদনকারী প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এর পর আমরা তাকে পুলিশে অভিযোগের পরামর্শ দেই।
বিপ্লব কুমার সাহা আরও বলেন, এই ঘটনার পর ৩ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে আমাদের ভিসা সেন্টারে একজন নারী (নুরুন্নাহার খাতুন মিলি) এসে আমিসহ আমাদের অফিসের সকল স্টাফকে হুমকি-ধামকি প্রদানসহ আমাদের চাকরি থেকে বরখাস্তের ভয় দেখান। ঘটনার পর অফিসের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে আমি মহনগরীর বোয়ালিয়া থানায় বৃহস্পতিবার একটি লিখিত অভিযোগ করি। এর পর থানা কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে সহযোগীতা করে ও অভিযুক্তকে নারীকে গ্রেপ্তার করে। আমাদের ভিসা সেন্টারে এমন ঘটনা এটাই প্রথম বলে দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
প্রি/রা/আ