‘মিষ্টি আমের মধুর রসে, সব শিশুরা উঠবে হেসে’—এ স্লোগান সামনে রেখে যৌথভাবে ‘আম উৎসব’ পালন করেছে রাজশাহী ও চাঁদপুর জেলার দুটি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন ‘স্কুল ফর হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন’ ও ‘লোটাস-বাড চ্যারিটি ফোরাম’।
বৃহস্পতিবার ঢাকা ও চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে পথশিশুদের স্কুল, এতিমখানা ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থী, ছিন্নমূল ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশে সংগঠন দুটি এ উৎসব আয়োজন করে।
এদিন সংগঠন দুটির তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা বস্তাভর্তি আম নিয়ে রাজধানীর হাজারীবাগের ‘স্নেহের ছায়া পাঠশালা’, ধানমন্ডির ‘অর্চিন কেয়ার’, হাতিরঝিলের ‘জুম বাংলাদেশ স্কুল’, গুলিস্তান ৩নং গেটের ‘পথের স্কুল’, পুরান ঢাকার ‘গো আপ ফাউন্ডেশন’, মিরপুর ২-এর ‘বিজয়ের পথযাত্রা’ ও কামরাঙ্গীরচরের ‘আমাদের বিদ্যানিকেতন’ এবং চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়ণপুরের ‘কাজীবাড়ি নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা’, ‘নারায়ণপুর আর্শ্বাদিয়া মাদ্রাসা’ ডাটিকারার ‘তাফহিমুল কুরআন হাফিজিয়া মাদ্রাসা’, ‘নারায়ণপুর পশ্চিম বাজার হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা’, ‘উত্তর কালিকাপুর নুরানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা’ ‘কালিকাপুর আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার নুরানি শাখা’ ও ‘পশ্চিম কালিকাপুর মহিলা মাদ্রাসা’য় বিভিন্ন জাতের প্রায় এক হাজার কেজি সুস্বাদু আম বিনামূল্যে বিতরণ করে।
জানতে চাইলে স্বেচ্ছাসেবীরা বলেন, ঢাকার বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা ও এতিমখানায় অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে, যাদের পরিবারের সদস্যদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও নেই, যাদের নিয়মিত দুই বেলা পেট পুরে খাওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে হয় প্রতিনিয়ত। এই দুস্থ, ছিন্নমূল ও এতিম শিক্ষার্থীদের জন্য পুষ্টিকর আম খাওয়া তো স্বপ্নের মতো। তাই এই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুখে এক ফালি হাসি ফোটাতেই আমরা ‘আম উৎসব’ পালনের উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা মূলত রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে সংগঠনের অর্থায়নে এসব আম ঢাকায় নিয়ে এসে বিতরণের উদ্যোগ নিই।
কেন এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগ— এমন প্রশ্নের জবাবে স্কুল ফর হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সোহানুল ইসলাম মিঠু বলেন, ‘আমরা যারা রাজশাহী অঞ্চলে বসবাস করি ধনী-গরিব সবাই কমবেশি আমের মৌসুমে আম খেয়ে থাকি; কিন্তু রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে, এতিমখানা, মাদ্রাসা, বস্তিবাসী, সুবিধাবঞ্চিত পথশিশু তাদের কাছে আম খাওয়া মানে বিলাসিতা। এই বৈষম্য দূর করার জন্য স্কুল ফর হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। আমাদের এই মহতী উদ্যোগে যারা আম, অর্থ ও শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি ভবিষ্যতে স্কুল ফর হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশন এমন উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় রক্ষা করে আরও বড়পরিসরে উৎসবের আয়োজন করবে। ‘
উল্লেখ্য, সংগঠন দুটি তাদের নিজ নিজ জেলায় বছরব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন প্রকল্প, রক্তদান, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, শীতবস্ত্র বিতরণ, ঈদ উপহার বিতরণ, মেধাবৃত্তি প্রদান, চিকিৎসা সহায়তা ও দুর্যোগকালীন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণসহ বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।