মঙ্গলবার | ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢামেক হাসপাতালে ট্রেইনি চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে স্থবির ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা

প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নতুন ভবনের ষষ্ঠ তলা। ফ্লোরে উঠতেই হাঁটাচলা করা মুশকিল হওয়ার অবস্থা। করিডোর, সিঁড়ি ও লিফটের পাশসহ পুরো মেঝেতে সারি সারি বিছানা। এই ফ্লোরের ৬০১ ও ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডে মূলত ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। তবে সম্প্রতি ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়া এবং ট্রেইনি চিকিৎসকদের দু’দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির কারণে দেখা দিয়েছে চিকিৎসক সংকট।

এতে স্থবির হয়ে পড়েছে ডেঙ্গু চিকিৎসা। গতকাল রোববার ঢামেক হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডগুলোয় এমন দৃশ্যই দেখা যায়।সরেজমিন দেখা যায়, হাসপাতালের নতুন ভবনের ষষ্ঠ তলায় তিল ধারণের ঠাঁই নেই। করিডোর থেকে শুরু করে পুরো জায়গা শিতল পাটি কিংবা চাদর ও বালিশ পেতে রোগী এবং তাঁর স্বজনরা শুয়ে আছেন।

সেখানে অবস্থিত ৬০১ ও ৬০২ নম্বর ওয়ার্ডেও ভিড় লেগে আছে। অনেকে ওয়ার্ডের বারান্দায় বিছানা পেতে আশ্রয় নিয়েছেন। ওয়ার্ড দুটির অ্যাকিউট ডেঙ্গু কর্নারে ডেঙ্গু রোগী ছাড়াও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করা হয়েছে। তবে ওয়ার্ডগুলোয় অল্পসংখ্যক চিকিৎসকের দেখা পাওয়া গেল।

যারা ছিলেন, তারাও রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। অন্যান্য ওয়ার্ডেও একই চিত্র দেখা যায়। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানান, ওই ওয়ার্ডগুলোয় ডেঙ্গু রোগীর পাশাপাশি অন্যান্য রোগীও ভর্তি আছেন। সম্প্রতি ট্রেইনি চিকিৎসকরা আন্দোলনে যাওয়ায় এসব রোগীর চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

রোগী ও স্বজনের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসকরা নিয়মিত তাদের দেখছেন না। যারা আসেন, তারা বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা দেন। কিন্তু পরীক্ষাগুলো করাতে গেলে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। পরীক্ষার স্যাম্পল জমা দিতে গিয়ে ঘণ্টাব্যাপী অপেক্ষা করতে হয়। ডাক্তার পাওয়া মুশকি। যার কারণে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

ষাটোর্ধ্ব আবুল কালাম আজাদ জানান, ডেঙ্গু হলে একাধিক পরীক্ষা করাতে হয়, যা ব্যয়বহুল। তাই তিনি ঢাকা মেডিকেলে এসে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর এখনও বিছানা পাননি। মেঝেতেই আছেন তিনি। ডাক্তারও তেমন আসেন না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন রিয়েলও ভর্তি হয়েছেন এই ওয়ার্ডে। বর্তমানে তাঁর রক্তের প্লাটিলেট সংখ্যা ২৫ হাজার। তিনি জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হলেও সেখানে ভালো চিকিৎসা না হওয়ায় ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তবে ডাক্তার না থাকায় এবং পরীক্ষা করানোর ভোগান্তির কারণে তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাজমুল হক বলেন, এ সময় কর্মবিরতিতে যাওয়া চিকিৎসকদের ঠিক হয়নি। আমাদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ট্রেইনি চিকিৎসক রয়েছেন। তাই আমরা স্বাভাবিক রোগীর সেবা বজায় রাখতে সমস্যায় পড়ছি। আন্দোলন দীর্ঘ হলে ভোগান্তি বাড়বে। সূত্র: সমকাল

প্রি/রা/আ

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.