ফুটবলারদের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ মর্যাদার পুরস্কারের নাম ব্যালন ডি’অর। যে ট্রফিটি পাওয়া যে কোনো খেলোয়াড়ের জন্যই অতি সম্মানজনক। গত দেড় যুগ ধরে এ ট্রফিটি নিজেদের করে নিয়েছিলেন লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। মাঝে লুকা মদ্রিচ আর করিম বেনজামা ছাড়া আর কেউ-ই সেখানে ঢুকতে পারেননি। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেওয়া হবে ৬৭তম ব্যালন ডি’অর ট্রফি।
এ বিশেষ ট্রফিটি রেকর্ড সর্বোচ্চ সাতবার নিজের ঝুলিতে ঢুকিয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। তার পরেই রয়েছেন পর্তুগিজ অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এ দুজনের বয়স হয়ে গেছে, তারা রয়েছেন ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে। ইতোমধ্যে এ দুজন ইউরোপকে বিদায় জানিয়েছেন।
বরাবরের মতো এবারও একাধিক ফুটবলার ব্যালন ডি’অর জয়ের দৌড়ে রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই শত শত কোটি ফুটবলপ্রেমীর কৌতূহল— ২০২৩ সালে কে পাচ্ছেন এটি। ইতোমধ্যে ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’ এবারের ব্যালন ডি’অর পুরস্কার প্রদানের তারিখ ঘোষণা করেছে। আগামী ৩০ অক্টোবর প্যারিসে আয়োজিত হবে ব্যালন ডি’অরের অনুষ্ঠান। যেখানে ২০২২-২৩ মৌসুমের বর্ষসেরাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে। সে হিসাবে মাত্র চার মাস বাকি।
চলতি মৌসুমে গোলডটকমের জরিপে ব্যালন ডি’অর জয়ের লড়াইয়ে রয়েছেন লিওনেল মেসি, আর্লি হালান্ড, কিলিয়ান এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও কেভিন ডি ব্রুইনারা। ইতোমধ্যে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা জিতেছে ম্যানচেস্টার সিটি। এর মধ্য দিয়ে মৌসুমে ট্রেবল জিতেছে সিটিজেনরা। তাই অনেকেই এগিয়ে রাখছেন হালান্ডকে।
তবে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল ও ফাইনালে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন হালান্ড। তবু ম্যানসিটি বস জানিয়েছেন, এবারের ব্যালন ডি’অর ট্রফিটি তার শিষ্য হালান্ডের হাতেই দেখতে চান। তবে এটি পাওয়াটা সহজ হবে না মোটেও। কেননা তাকে প্রতিযোগিতা করতে হবে বিশ্বকাপজয়ী লিওনেল মেসির সঙ্গে।
এবার ব্যালন ডি’অর নিয়ে নিজের পছন্দ বাছলেন বিশ্বকাপজয়ী ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি ফুটবলার রোনালদো নাজারিও। সম্প্রতি তিনি নিজের পছন্দের কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমে। কথা বলেছেন আলবিসেলেস্তে টকের সঙ্গে। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন কার হাতে দেখতে চান এবারের ফুটবলের সর্বোচ্চ মর্যাদার ট্রফিটি।
ব্রাজিলিয়ান এ কিংবদন্তি জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমের ব্যালন ডি’অরের শিরোপাটি তিনি কাতার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির হাতেই দেখতে চান। তিনি বলেন, আমি মনে করি তাকে মুকুট দেওয়া হবে। সে বিশ্বকাপ জিতেছে, যা অনেক বড় টুর্নামেন্ট। কাতার বিশ্বকাপে মেসি ব্যতিক্রমী ফর্মে ছিলেন।
রোনালদো মেসিকে এগিয়ে রাখলেও হালান্ড প্রস্তুত টক্কর দিতে। ব্যালন ডি’অরের ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ক্যালেন্ডার হিসেবের পরিবর্তে মৌসুমের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে দেওয়া হবে ব্যালন ডি’অর। গেল বছরের ১ আগস্ট থেকে চলতি বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়া হবে।
সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে ক্লাবের হয়ে ৫৩ ম্যাচে ৫২ গোল করেছেন হালান্ড। সব মিলিয়ে মৌসুমজুড়ে ৫৩ গোল আর ৯টি অ্যাসিস্ট আছে নরওয়েজিয়ান গোল মেশিনের। দলকে ঐতিহাসিক ট্রেবল জেতাতে ভূমিকা রেখেছেন সামনে থেকে। এ ছাড়া জিতেছেন বেশ কিছু ব্যক্তিগত পুরস্কার। মেসিকে টেক্কা দিতে এ পরিসংখ্যানকে যথেষ্ট বলাই যায়!
একটা রীতি অবশ্য মেসিকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে রাখছে। গেল তিনটি বিশ্বকাপে শিরোপাজয়ী দলের কোনো খেলোয়াড়ের হাতে উঠেনি ব্যালন ডি’অর। ২০১০ সালে ব্যালন ডি’অর জিতেছিলেন মেসি। এটা নিয়ে তুমুল বিতর্কও হয়েছিল। ক্লাবের হয়ে ৬০ গোল করলেও জিতেছিলেন শুধু লা লিগা ট্রফি। বিশ্বকাপেও ছিলেন ফ্লপ। অন্যদিকে ইন্টার মিলানকে ট্রেবল ও নেদারল্যান্ডসকে বিশ্বকাপে রানার্সআপ করিয়েও ব্যালন ডি’অরের তালিকায় চতুর্থ হয়েছিলেন ডাচ ফুটবলার ওয়েসলি স্নাইডার।