মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে বাড়ছে ছাগল মোটাতাজার খামার

রাজশাহীতে গরুর খামারের পাশাপাশি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ছাগল মোটাতাজা করার খামারও। দেশীয় পদ্ধতিতে ব্ল্যাক বেঙ্গলসহ বিভিন্ন জাতের ছাগল লালন-পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন খামারিরা। খামার ছাড়াও অনেকই বাড়িতেও একই পদ্ধতিতে মোটাতাজা করছে ছাগল।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, এবারের কোরবানীর ঈদকে সামনে রাজশাহী জেলায় খামার ও বাড়িতে প্রায় সোয়া ৫ লাখ ছাগল লালন-পালন করা হয়েছে। আর এই খামারিদের আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতা দিচ্ছে সরকারের পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শতফুল বাংলাদেশ।

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গণীপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের সোহেল রানা ও তার স্ত্রী রিমা খাতুন; দুই জনেই স্নাতক পাস। চাকরি না পেয়ে বেকারত্ব ঘুচাতে পাঁচ বছর আগে বাড়িতে শুরু করেন ছাগল লালন-পালন। ছয় থেকে সাত মাস ছাগল লালন-পালন করে কোরবানীর ঈদের আগে বিক্রি করে দিতেন তারা। এতেই সাবলম্বী হয়ে উঠেন এই দম্পতি। গত দুই বছর আগে বাড়ির পাশে গড়ে তুলেছেন ছাগল মোটাতাজা করার খামার।
tbcJ0vr_TTc

সোহেল রানা জানান, চলতি বছরে তার খামারে লালন-পালন করা হয়েছে ৩০টি ছাগল। ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় তিনি ৩০টি ছাগল ছানা কিনেছিলেন। ছাগলের খাবারে প্রতিদিন খরচ হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।

তিনি বলেন, গত ২০ জুনে খামার থেকে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ৮টি ছাগল বিক্রি করেছি। বাকি ২২টির দাম উঠেছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। আশা করছি ৪ লাখ টাকায় এই ছাগলগুলো বিক্রি হবে। সেটি যদি হয় তবে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

রিমা খাতুন বলেন, ছাগলগুলোকে পরিবারের সদস্যের মতোই ভালবাসা দিয়ে লালন-পালন করেছি। খিদে পেলে সন্তানের মত মা মা বলে ডাকতে থাকে। আমি আসছি বলে তারা থেমে যায়। আমি যা বলি তারা তাই শুনে।

তিনি আরও বলেন, ছাগলগুলোর খাবারের তালিকায় রয়েছে দানাদার জাতীয় খবার গমের ভূষি, ডালের ভূমি, চালের গুড়া, চালের খুদ, খইল ও ঘাস। খামারের পাশে ঘাস চাষ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এলাকার অনেকেই আমাদের খামার দেখতে আসে। অনেকেই এ ধরণের খামার কিভাবে করবো জানতে চান।

বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শতফুল বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক নাজিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, সরকারের পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শতফুল বাংলাদেশ ছাগল পালনে উদ্যোক্ত ও খামার তৈরীতে আর্থিক ও কারিগরী সহযোগিতা দিয়ে আসছে। ছাগলের বাচ্চা কিনে দেশীয় পদ্ধতিতে ছয় মাস লালন-পালন করে সাবলম্বী হচ্ছেন খামারিরা। অনেকেই বছরে দুইবার করে বিক্রি করে অধিক লাভবান হচ্ছেন।

রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, রাজশাহীতে ছাগল পালনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে রাজশাহীতে শতাধীক ছাগল মোটাতাজা করার খামার রয়েছে। এছাড়াও বাড়ি বাড়ি দুই থেকে পাঁচটা পর্যন্ত ছাগল পালন করছে কৃষকরা।

তিনি বলেন, রাজশাহীতে ছাগলের খামার বাড়ানোর জন্য তারাসহ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা শতফুলও কাজ করছে। এ বছর কোরবানী জন্য জেলায় ছাগল লালন-পালন হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ৭৭৫টি। যা গত বারের চেয়ে প্রায় এক লাখ বেশী।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.