নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর পবা উপজেলার এয়ারপোর্ট থানাধীন বালিয়াডাঙ্গা এলাকায় নাজিম উদ্দিনের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগওে বাড়ির সব পুরে ছাই হয়ে গেছে। তবে কোন হতাহত হয়নি।
শনিবার সকাল ১০টার দিকে সরে জমিনে সেখানে গেলে বাড়ির মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, মৌজা সিন্দুর কুসমী, জে.এল নং-১২৮, আর.এস.খতিয়ান ৭৭৩, হাল দাগ নং-৬২৪১, রকম-বাগান,( বর্তমানে বাড়ির ভিটা), পরিমান-প্রায় ২কাঠা। তিনি এই বাড়িতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। তারা বেশ কয়েকজন ভাই-বোন। এই জমির সাথে তাদের অন্যান্য ভাই-বোনদের জমি রয়েছে। কিন্তু পৈত্রিক এই জমি বন্টননামা এখনো হয়নি।
এর মধ্যে তার বোন রায়মা, রাহেলা ও জাহানারা একই গ্রামের মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে লাবণী আক্তার শিল্পির নিকট দেড় কাঠা জমি বিক্রয় করেন। বন্টননামা না হওয়া সত্ত্বেও শিল্পি জোরপূর্বক দেড় কাঠা জমি দখলে নিয়েছে। এরপর তার জমি জবর দখল করার জন্য প্রতিনিয়ত হুমকী-ধামকী দেিয় আসছে। তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন শিল্পি তার ভাড়াটে গুন্ডাবাহিনী দিয়ে ক্রয়কৃত জমি বাদ দিয়ে তার জমি দখল করার পাঁয়তারা করে আসছে। এনিয়ে ইতোপূর্বে তাদের নামে উল্টো একাধিক মামলাও করেছেন শিল্পি।
সেইসাথে সর্বদা তিনি তার দলবল তাকে এবং তার পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলার হুমকী দিয়ে আসছিলো বলে উল্লেখ করেন নাজিম উদ্দিন। এনিয়ে বেশ কয়েকবার এয়ারপোর্ট থানায় অভিযোগ দিতে গেলে সে অভিযোগ থানার অফিসার ইনচার্জ নেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। মূলত থানার গাফিলতি ও অসহযোগিতার কারইে আজ তার এতোবর ক্ষতি হলো বলে উল্লেখ করেন নাজিম উদ্দিন।
কারা ঘরে আগুন দিয়েছে জানতে চাইলে নাজিম উদ্দীন বলেন, মুল হোতা বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের (তবে তিনি ঢাকায় থাকেন) মৃত মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে লাবনী আক্তার শিল্পি (৪২), তহিদুল ইসলামের স্ত্রী কাজলী বেগম (৩৮), মৃত আলী হোসেনের ছেলে আলম (৪৫), শুকুর উদ্দীন অরফে শুটকীর ছেলে তহিদুল ইসমাম (৪৫), আলম এর স্ত্রী লায়লা বেগম ও আলমের ছেলে জয় (১৯)।
এছাড়াও বায়া এলাকার নহির মন্ডলের ছেলে ইসমাইল হোসেন(২৭) এবং শাহ্ মখ্দুম থানার ওমর এলাকার মাজদার হোসেনের ছেলে জাহিদ হোসেন(২৬) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪-৫ জন। জমিজমা নিয়ে পুর্বের জেরে উপরোক্ত ব্যক্তিরা তার বাড়িতে আগুন দিয়ে সব পুড়িয়ে দিয়েছে। মূলত তাদের পুড়িয়ে মারার জন্য ভূমিদস্যুরা ঘরে আগুন দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে নাজিম উদ্দিন এর স্ত্রী রেখা বেগম আহাজারী করতে করতে বলেন, তাঁর ঘরে এখন কিছুই নাই। সব কিছু পুরে ছাই হয়ে গেছে। পাকা বাড়ি করার জন্য গরু বিক্রি করা চার লক্ষ সত্তর হাজার টাকা তিনি ঘরেই রেখেছিলেন। সেইসাথে কাপড় ও অন্যান্য আসবাবপত্র সহ এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা ও স্বর্নের গহনা ষাট হাজার টাকা, সব মিলিয়ে সাড়ে ছয় লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে তার। এখন তারা সব কিছু হারিয়ে পথের ভিখারী হয়ে পড়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। ভাত রান্না করে খাওয়ার কোন ব্যবস্থাও নাই বলে কাঁদতে কাঁদতে জানান।
এদিকে এলাকাবাসীর বলেন, শিল্পি অত্যন্ত সন্ত্রাসী ধরনের মেয়ে। এমন কোন খারাপ কাজ নাই শিল্পি করেন না। ইতোপূর্বে ঐ জমি নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় সাংবাদিকদের নামেও শিল্পি মামলা করেছেন। শুধু তাইনয় নাজিম উদ্দীনদের নামেও মামলা করেছেন বলে জানান তারা। তারা আরো বলেন, পূর্বে এয়ারপোর্ট থানা এই পরিবারকে কোন সহযোগিতা করেননি। যখন বড় ধরনের ক্ষতি হলো তখন এসে তারা বসে আছেন বলে অভিযোগ করেন।
পরিবারের সদস্যগণ ও এলাকাবাসী এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবং ঘর আগুন দিয়ে পোড়ানোর প্রতিবাদ জানান। সেইসাথে দোষিদের আইনের আওতায় এনে আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান তারা।
ঘটনাস্থল এয়ারপোর্ট থানা পরিদর্শন করেছেন। সেইসাথে অত্র জোনের ডিসিও ঘটনাস্থও পরিদর্শন করেন। এয়ারপোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ এমরান বলেন, তিনি ঘটনাস্থলে রাত থেকেই আছেন। অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসামীদের আটকের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের আটক করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
প্রি/রা/আ