শুক্রবার | ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে ধর্ষণের পর ভিডিও ছড়ানোয় সাত বছরের সাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর সেই ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে আপত্তিকর ভিডিওটিও ছড়িয়ে দেওয়া হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এই অপরাধে এক ব্যক্তিকে পৃথক তিনটি ধারায় মোট সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তাকে জরিমানা করা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা ও অনাদায়ে আরও নয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
আজ বুধবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পৃথক তিনটি ধারায় আসামিকে এই সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া ধর্ষণের মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সাত বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামির নাম সিরাজুল ইসলাম শিরু (৫৬)।

রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে আদালতের নির্দেশে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট ইসমত আরা বেগম জানান, ২০২০ সালের ২৪ আগস্ট সকালে সিরাজুল ইসলাম শিরু বাড়িতে একা পেয়ে ভুক্তভোগী ১৭ বছরের ওই কিশোরীকে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপনের কুপ্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হলে শিরু ওই কিশোরীর গলায় ধারালো চাকু ধরে হত্যার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

এছাড়া ওই কিশোরীর আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন। আর এ ঘটনা কাউকে জানালে সেই ভিডিও ভাইরাল করে দেবে এবং কিশোরীর ছোট ভাইকে খুন করে মরদেহ গুম করার হুমকি দেয় শিরু। পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের বিয়ে ঠিক হয়। এ সময় শিরু হবু বরের কাছে আগের ধর্ষণের সময় করা ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভিকটিম বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এর কারণ জানতে চাইলে অভিভাবকদের পুরো ঘটনা জানায়। পরে যৌন নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে ধর্ষণ ও ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ এনে শিরুর নামে পৃথক দুইটি মামলা করেন।

এডভোকেট ইসমত আরা বেগম আরও জানান, এ ঘটনায় আসামিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বিচার শুরুর পর আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সিরাজুল ইসলাম শিরু দোষী সাব্যস্ত হন। তাই আদালত আজ দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০১৮ এর ২৫(১)/২৬(১)/২৯(১) ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০১৮ এর ২৫(২) ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা দেওয়া হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।  এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২০১৮ এর ২৯(২) ধারায় এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

অপরদিকে ধর্ষণের মামলাটি রাজশাহীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সেখানেই ওই মামলার রায় ঘোষণা হবে বলেও জানান অ্যাডভোকেট ইসমত আরা।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.