শনিবার | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে সভাপতি-সম্পাদকের অন্তর্দ্বন্দ্বে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা চরম দুর্ভোগে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) রাজশাহী জেলা শাখার কার্যালয়ে তালা দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ও বাকবিতন্ডার ঘটনা ঘটে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) নগরীর স্বর্ণকার পট্টির সকল দোকান ও শোরুম বন্ধ ছিল প্রায় দুই ঘন্টা।

জানা গেছে, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের মধ্যে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে রাজশাহীর কার্যালয়ে তালামারাকে কেন্দ্র করে। এই দ্বন্দ্বের প্রেক্ষিতে সাধারণ সদস্য ও ব্যবসায়িরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

জানা যায়, চলতি বছরের ১লা জানুয়ারী তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের ফলাফল ও এসোসিয়েশনের ক্ষমতা ও অর্থের হিসেব নিয়ে নির্বাচন পরবর্তী সময় থেকেই চলছে এই সুপ্ত দ্বন্দ্ব।

রাজশাহী শাখার সভাপতি মানিকসহ সাধারণ সদস্য ও ব্যবসায়িরা অভিযোগ করে বলেন, গত ৪ নভেম্বর রাত আনুমানিক ১০ টা পাঁচ মিনিটে সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ডাবলু তার লোকজন নিয়ে অনৈতিক ভাবে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরেরদিন সকালে সভাপতি সহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা কার্যালয়ের গেটে ভিন্ন তালা দেখে চিন্তিত হয়ে পরেন। পরবর্তীতে সাধারণ সম্পাদক ডাবলুকে কার্যালয়ের তালা খুলতে বললে তিনি নোংড়া ভাষায় গালিগালাজসহ পরিকল্পিত ভাবে সার্বিক পরিবেশ উত্তপ্ত করে তোলেন। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়িরা ক্ষোপ ও প্রতিবাদ প্রকাশ করলেও পরিস্থিতি এখনো বেসামাল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাধারণ ব্যবসায়ী ও বাজুস রাজশাহী জেলা শাখার সদস্যরা জানান, নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক ডাবলুর প্যানেল পরাজিত হবার পর থেকেই মাঝেমধ্যেই সভাপতি-সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে এমন উত্তেজনা আর বাকবিতন্ডার লেগেই থাকতো। বিষয়টি সুরাহা করার নিমিত্তে কেন্দ্রের কাছে স্বশরীরে অভিযোগ দিলেও আজ অবদি সেটির কোন সমাধান হয়নি। ২১ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচিত এই কমিটির নির্বাহী সদস্য সংখ্যা ২১ জন।

এরমধ্যে, সভাপতির প্যানেলে রয়েছে ১৬ জন। আর অভিযুক্ত সম্পাদকরে প্যানেলে রয়েছে ৫ জন। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করার কথা বলে বিভিন্ন স্থান, ব্যক্তি ও সদস্যদের কাছ থেকে সম্পাদক ডাবলু ও তার লোকজন মোটা অংকের অর্থ উত্তোলন করে। সেই টাকার হিসেব সভাপতি মানিক চাইতে গেলে ডাবলু ও তার লোকজন হিসেব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আর তখন থেকেই দুই প্যানেলের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছিল।

এবিষয়ে সভাপতি মানিক বলেন, ডাবলু তার লোকজন নিয়ে এসোসিয়েশনের অর্থ যখন তখন খরচ করে। সে কখনোই সংগঠণের নিয়মনীতি মান্য করেনা। এসোসিয়েশন থেকে বারবার নিষেধ করা হলেও ডাবলু সেটি অমান্য করে নিজের খেয়াল খুশি মতো চলে। যেটি কিনা সংগঠণের নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর সমতুল্য। ঘটনার দিন রাতে ডাবলু সহ শামিউল ইসলাম, রনি চন্দ্র মন্ডল, মনিসা রায়, সেলিম হোসেন, মনিরুল ইসলাম মনি সহ আরো বেশ কয়েকজন কার্যালয়ে গিয়ে প্রধান ফটকে নিজেদের তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরই প্রতিবাদে ৫ নভেম্বর সকালে প্রায় দুই ঘন্টার মতো স্বর্ণকার পট্টির সকল দোকান বন্ধ রাখা হয়েছিল। একদিকে হরতাল-অবরোধ, তো অন্যদিকে, সভাপতি-সেক্রেটারির দ্বন্দ্ব। এভাবে চলতে থাকলে স্বর্ণ ব্যবসায়িরা পড়বেন চরম বিপাকে বলে মন্তব্য সাধারণ স্বর্ণ ব্যবসায়িরা।

এবিষয়ে জানতে চাইলে, প্রধান কার্যালয় থেকে দায়িত্ব প্রাপ্ত রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম অপু বলেন, সভাপতি-স্পাদকের মধ্যে নানা বিষয়ে চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে কেন্দ্র পরামর্শ ও নির্দেশনা থাকলেও সেটি আজও সমাধান হয়নি। কেন্দ্র থেকে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এই দ্বন্দ্ব নিরসনে। তারই ধারাবাহিকতায় আমি সভাপতি ও সম্পাদকের কাছে কার্যালয়ে চাবি চেয়েছিলাম। সভাপতি আমাকে চাবি বুঝিয়ে দিলেও সম্পাদক ডাবলু আমাকে এখনো চাবি দেয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.