মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যাত্রীসেবা বাড়াতে ৪ অঞ্চলে ভাগ হচ্ছে রেলওয়ে

প্রিয় রাজশাহী ডেস্ক: স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি অঞ্চলে (পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল) ভাগ হয়ে পরিচালিত হচ্ছে। অঞ্চল দুটির অধীনে বর্তমানে পরিচালন বিভাগ আছে ৪টি। রেল নেটওয়ার্ক আরও সম্প্রসারণ করে যাত্রীসেবার মান বাড়াতে রেলওয়ের বিদ্যমান কাঠামো সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চার অঞ্চলে ভাগ হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। একইসঙ্গে বিদ্যমান ৪টি বিভাগ থেকে বিস্তৃত করে ৮টি বিভাগ করা হবে।

সম্প্রতি (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান কাঠামো বিভাজন সংক্রান্ত এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান।

সভার কার্যবিবরণী সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের বিদ্যমান পশ্চিমাঞ্চল রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে গঠিত। এ অঞ্চলকে ভেঙে খুলনা ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের নতুন ‘দক্ষিণাঞ্চল’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। নতুন এ অঞ্চলের অধীনে পরিচালন বিভাগ হিসেবে যথাক্রমে যশোর ও ফরিদপুর করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম, সিলেট, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ নিয়ে গঠিত বর্তমান পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের ঢাকা ও ময়মনসিংহ আলাদা করে ‘মধ্যাঞ্চল’ নামে নতুন অঞ্চল গঠিত হবে। এ অঞ্চলের অধীনে পরিচালন বিভাগ থাকবে ময়মনসিংহ ও ঢাকা। এ সিদ্ধান্তের আলোকে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে থেকে ঢাকা বিভাগ বাদ পড়ায় নতুন পরিচালন বিভাগ হিসেবে সিলেটকে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজশাহী ও রংপুর নিয়ে গঠিত রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পরিচালন পরিধির এলাকা কমলেও বিদ্যমান পরিচালন বিভাগ পাকশী ও লালমনিরহাট অপরিবর্তিত থাকছে।

সভাসূত্রে জানা গেছে, নতুনভাবে প্রস্তাবিত বিভাগসমূহের অধিক্ষেত্র, জনবলসহ পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পার্সোনেল শাখার মাধ্যমে রেলপথ মন্ত্রণালয়ে দ্রুত প্রেরণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন রেলওয়ের মহাপরিচালক।

সভায় এসব সিদ্ধান্তের পাশাপাশি কার্যবিবরণীতে উল্লেখ করা হয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৩ অক্টোবর, ২০১৪ তারিখে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিদর্শনকালে রেলপথ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ রেলওয়ের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ এবং জনগণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ের বিদ্যমান দুটি অঞ্চলকে ৪টি অঞ্চলে বিভক্ত করার অনুশাসন প্রদান করেন। সে অনুশাসনের পরিপ্রেক্ষিতেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন কাঠামোতে চার অঞ্চলের প্রধান হবেন ৪ জন মহাব্যবস্থাপক। আর পরিচালন বিভাগগুলোর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন একজন করে বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক। একইভাবে রেলের পুরো জনবল কাঠামোকে ঢেলে সাজানো হবে। ট্রেন পরিচালনাগত সিদ্ধান্তগুলো নেবে অঞ্চল ও বিভাগ। আর নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো দেখবে রেলের সদর দফতর তথা রেলভবন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যাত্রীসেবাসহ রেল নেটওয়ার্ক বাড়াতেই ৪ অঞ্চলে ভাগ করা হচ্ছে রেলওয়েকে। ট্রেন পরিচালনা ও সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে এসব বিভাগ ও অঞ্চল। এর আলোকে রেলওয়ের জনবল কাঠামো পুনর্বিন্যাসের ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

সারা দেশে এখন রেলপথ আছে ৩ হাজার ৯৩ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলে রেলপথ আছে ১ হাজার ৩৩৩ দশমিক ৯৩ কিলোমিটার। আর পশ্চিমাঞ্চলে রেলপথ আছে ১ হাজার ৭৫৯ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। রেলওয়ের বিদ্যমান মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন হলে ভবিষ্যতে তা বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৪ হাজার ৭০০ কিলোমিটার। সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.