নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন নগরী হিসাবে স্বীকৃত রাজশাহী মহানগরীতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য আবার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। রাতে অথবা দিনে রাস্তায় বের হলেই নগরবাসী অনেককে ছিনতাইকারীর কবলে পড়তে হচ্ছে। পুলিশে অভিযোগ দিয়েও ভুক্তভোগীরা প্রতিকার পাচ্ছে না। বছরখানেক আগে পুলিশি তৎপরতায় নগরীতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে আসে। তবে গত কয়েক মাসে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারীরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
১৬ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে অটোরিকশাযোগে পদ্মা আবাসিক এলাকায় ফিরছিলেন স্কুলশিক্ষিকা আলেয়া আক্তার ও তার স্বামী চারঘাটের শলুয়া কলেজের ভাইস-প্রিন্সিপাল আবু মিল্লাত। পদ্মা আবাসিকের দুই নম্বর সড়কের পশ্চিম মাথায় তিন সশস্ত্র ছিনতাইকারী তাদের অটোর গতিরোধ করে।
অস্ত্রের মুখে একটি ব্যাগ, নগদ দুই হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা। আলেয়া জানান, ব্যাগে স্বামী-স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কয়েক হাজার টাকার সঞ্চয়পত্র ছিল। এ ঘটনার পর চন্দ্রিমা থানায় তারা অভিযোগ দিলেও পুলিশ সেটি সাধারণ ডায়েরি আকারে রেকর্ড করেন।
২৯ ডিসেম্বর ভোর রাতে ট্রেন থেকে নেমে বড়বনগ্রামের বাসায় ফিরছিলেন ব্যবসায়ী মনজুর রহমান (৫৪) ও তার ছেলে শাকিল হোসেন (২৮)। এ সময় রাজশাহী পলিটেকনিকের প্রধান ফটকের সামনে চার ছিনতাইকারী তাদের গতিরোধ করেন। তাদের মালামাল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে ছিনতাইকারীর দল। ব্যাগ ও মালামাল না ছাড়ায় ছিনতাইকারীরা শাকিলকে ছুরিকাঘাত করে। ছেলেকে রক্ষা করতে গিয়ে মনজুরও ছিনতাইকারীদের অস্ত্রের আঘাতে জখম হন। এরপর ছিনতাইকারীরা মালামাল ও ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মেহেরচন্ডি ফ্লাইওভারের নিচে হাঁটার সময় সস্ত্রীক ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ছাদেকুল আরেফিন মাতিন। দুটি মোটরসাইকেলে আসা ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে একটি ব্যাগ, দুটি মোবাইল ফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ব্যাগে ব্যাংকের তিনটি এটিএম কার্ড, জাতীয় পরিচয়পত্র, নগদ ১৮ হাজার টাকা ও বাসার চাবিসহ কিছু দরকারি কাগজপত্র ছিল। এ ব্যাপারে চন্দ্রিমা থানায় মামলা হলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি।
জানা গেছে, মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও পথগুলোর প্রবেশ ও নির্গমন পথে সিসিটিভি ক্যামেরা অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে সন্ধ্যা হলেই মোটরসাইকেল নিয়ে ছিনতাইকারীরা বিভিন্ন সড়কে নেমে পড়ছে। পুলিশ ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করতে পারছে না।
এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার বলেন, নগরীতে ছিনতাই রোধে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহল ও নজরদারি রয়েছে। মামলা হলে মালামাল উদ্ধারের পর সেগুলো ফিরিয়ে দিতে পুলিশের সুবিধা হয়।