নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর ব্যস্ততম এলাকা লক্ষ্মীপুর। এই এলাকা মেডিকেল এলাকা হিসেবে পরিচিত। কারন এলাকাতে রয়েছে পপুলার, রয়্যাল ও ল্যাবএইডসহ বড় বড় ডায়গণষ্টিক সেন্টার। সেখানে শত শত ডাক্তার প্রতিদিন রোগিদের সেবা প্রদান করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার জনগণ আসে চিকিৎসা সেবা নিতে। এক কথায় বলা চলে এই একটি ব্যস্ততম এলাকা।
অথচ গত চারমাস পূর্বে হঠাৎ করে ঝাউতলা এলাকার ডায়াবেটিকস ভবনের এর সামনে ট্রাফিক ব্যারিকেট বসিয়ে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ শুরু করে। সে সময়ে এর উদ্বোধন করেন রাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি ও ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জানে আলম জনি।
এতে করে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত জনগণ এবং স্থানীয় জনগণরা চিকিৎসা সেবা এবং বাজার করতে আসা জনগণ পড়েন বিড়ম্বনায়। বিশেষ করে ভাটাপাড়া, চন্ডিপুর, মহিষবাথান, রাজপাড়া ও কোর্ট ষ্টেশন এখাকাসহ পশ্চিমাঞ্চলের লোকজন পড়েছেন বেশী বিড়ম্বনায়। তাদেরকে হয় ঘোড়াচত্বর নতুবা সিএন্ডকিব মোড় হয়ে ঘুরে লক্ষ্মীপুর মোড়ে আসতে হয়। এই ঝামেল াএড়াতে জনগণ অন্যত্র বাজারে কেনাকাটা করতে যাওয়ায় লক্ষ্মীপুর বাজারের বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িরা পড়েছেন বিপাকে। তাদের ব্যবসার অনেক ক্ষতি স্বাধিত হচ্ছে।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য লক্ষ্মীপুর মোড় হতে ঝাউতলা মোড় পর্যন্ত বন্ধ রাস্তা পূর্বের ন্যায় পুর্নাঙ্গভাবে খুলে দেয়ার দাবীতে রোববার বেলা ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর মোড় এলাকায় লক্ষ্মীপুর বাজার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির আয়োজনে মানববন্ধন করা হয়।
লক্ষ্মীপুর বাজার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আলমগীর খান এর সভাপতিত্বে মানবন্ধনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসিক ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুরুজ্জামান টুকু।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি রাজশাহী শাখা ও লক্ষ্মীপুর বাজার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা গোলাম সারওয়ার স্বপন।
এছাড়া লক্ষ্মীপুর বাজার ব্যবসায়ী ও দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি বাবলু, সহ-সাধারণ সম্পাদক আরশাদ আলী হাবিবুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রানা খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক বাইতুল ইসলামসহ অত্র সমিতি অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, দোকান মালিক, ব্যবসায়ী ও কর্মচারীসহ শত শত জনগণ উপস্থিত ছিলেন।
ব্যবসায়ীরা বলেন, আংশিক রাস্তা বন্ধ করে ওয়ানওয়ে রাস্তা করায় জনগণ লক্ষ্মীপুর বাজারে আসতে পারেনা। এ অবস্থায় টিবি রোড দিয়ে ঘোড়াচত্বর হয়ে ঘুরে লক্ষ্মীপুর বাজার আসতে হয়। এজন্য জনগণ এদিকে না এসে তারা দাশপুকুর বউ বাজার, কোর্ট বাজার ও সাহেব বাজারে চলে যায়। এতে করে তাদের ব্যপক ক্ষতি স্বাধিত হচ্ছে। সমিতির নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ীরা দুইদিনের মধ্যে রাস্তা খুলে দেয়া এবং রাস্তার উপরে ভ্যানসহ অন্যান্য যানবাজন রেখে ব্যবসা বন্ধ করার দাবী জানান।
প্রধান অতিথি বলেন, বিগত চারমাস পূর্বে ট্রাফিক বিভাগ ও ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছিলো। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিলো একবেলা করে আংশিক রাস্তা বন্ধ রেখে সকল ধরনের যানবাহন সরাসরি লক্ষ্মীপুর মোড় যেতে না দিয়ে প্যারামেডিকেল দিয়ে টিবি রোড দিয়ে ঘোড়াচত্বর হয়ে লক্ষ্মীপুর যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে রাস্তা ওয়ান-ওয়ে করার নামে ট্রাফিক সার্জেন্ট ট্রাফিক দিয়ে মোটরসাইকেলসহ অটোরিক্সা ও রিক্সা থামিয়ে কাগজ দেখার নামে মামলা দিচ্ছে। এটা কোনভাবেই কাম্যনয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনিও এর বিরোধিতা করেন এবং আগামী আটচল্লিশ ঘন্টার মধ্যে এর সমাধান করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রধান বক্তা স্বপন বলেন, লক্ষ্মীপুর এলাকা একটি সর্বাধিক একটি ব্যস্ততম স্থান। অথচ সকল দিকের রাস্তা বড় করলেও কোন কারনে এই রাস্তা বড় করা হচ্ছেনা বলে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন।
তিনি আরো বলেন, একদিকে সরু রাস্তা, তার উপরে সকল ফুটপাত দখল হয়ে আছে। এছাড়াও রাস্তার উপরে বিভিন্ন ধরনে ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ীরা ভ্যান ও টেবিল বসিয়ে ব্যবসা করায় জনগণের চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। ফুটপাত অবমমুক্ত ও রাস্তার উপরে ব্যবসা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে দুই দিনের মধ্যে পুর্নাঙ্গ রাস্তা খুলে দিয়ে জনগণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার দাবী জানান তিনি।
আর এই দাবী না মানলে আগামীতে রাজশাহী মহানগরীর সকল ব্যবসায়ীদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে এবং লক্ষ্মীপুর মোড়সহ পুরো রাস্তায় দোকান বসিয়ে ব্যবসা করা হবে হুঁশিয়ারী দেন তিনি।
সব শেষে মানববন্ধনে উপস্থিত সকলে মিলে লক্ষ্মীপুর মোড় হতে ঝাউতলা পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করেন।