শনিবার | ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ধর্ষণের আসামিরা! পুলিশ বলছে পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চোখের সামনেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার আসামিরা। ভুক্তভোগী গৃহবধূ আর তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে হাসাহাসি করছেন। যা নিয়ে আক্ষেপ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং বিচারের দাবি জানালেন ভুক্তভোগী নারী। তবে পুলিশ বলছে, আসামিরা পলাতক। তাই একজনকেও গ্রেফতার করা যায়নি।

শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের রাজশাহী শাখা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই গৃহবধূ (১৯)। এ সময় পাশে ছিলেন তার স্বামী।

তাদের বাড়ি রাজশাহী নগরীর শিরোইল কলোনি মহল্লায়। ভুক্তভোগীর বর্ণনা অনুযায়ী, গত ৫ মে রাতে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তিনি। এ নিয়ে থানায় মামলা করতে গেলেও পুলিশ নেয়নি। পরে ৯ মে তিনি আদালতে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন- একই এলাকার মো. পারভেজ (৩৫), রুহুল আমিন (৩০), হাসিব (২৫), ইসলাম (২৭) ও তিয়াস (২৫)।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ গত ৫ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের ছাড়পত্রে বলা হয়েছে, তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী গৃহবধূ বলেন, আসামিরা এলাকার একটি সরকারি গুদামের ভেতরে আড্ডা দেয়, মাদকসেবন করে। সম্প্রতি পুলিশ সেখান থেকে কয়েকজনকে আটক করে। এতে তারা সন্দেহ করে যে, ওই গৃহবধূর স্বামীই তাদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছেন। এরই জেরে আসামিরা গত ২ মে তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে মারধর করে। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ৫ মে রাতে ওই গৃহবধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।

ভুক্তভোগী জানান, রাত ৯টার দিকে তিনি বাজার থেকে ফিরছিলেন। একটা নির্জন স্থানে মামলার আসামিরা তার নাকে ওষুধ স্প্রে করে। এরপর তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একটি স্কুলের পাশের জঙ্গলে নিয়ে আসামিরা তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে আসামিরা তাকে ফেলে পালিয়ে যায়। রাত ২টার দিকে গোঙানির শব্দ শুনে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে যান এবং পরিবারকে খবর দেন। পরে ওই গৃহবধূকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নির্যাতনের শিকার ওই গৃহবধূর স্বামী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এ ঘটনায় তারা মামলা করতে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় যান। কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। তাই বাধ্য হয়ে ৯ মে আদালতে মামলা করেন। কিন্তু আদালতে মামলা করার কারণে পুলিশ ক্ষুব্ধ হয়। এমনকি এ পর্যন্ত কোনো আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়নি।

তিনি মামলার সঠিক তদন্ত নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে তিনি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে চন্দ্রিমা থানার ওসি মাহবুব হোসেন বলেন, ‘থানায় মামলা করতে এলে তো নেওয়া হতোই। তারা মামলা করেছেন আদালতে। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামলার তদন্ত করছেন। সুষ্ঠুভাবেই তদন্ত চলছে, সংশয়ের কারণ নেই। আসামিরা পলাতক থাকায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.