সোমবার | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুঠিয়ায় দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ঢাঁকা পড়েছে অবৈধ স্থাপনায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়াঃ ১২ কোটি টাকা ব্যায় করে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের মডেল মসজিদটির দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ঢাঁকা পড়েছে পুঠিয়া উপজেলা পরিষদের অবৈধ মার্কেটের স্থাপনায়। প্রবেশ পথের কোন সঠিক সুরহা হয়নি এখনো। দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপনাটির সৌন্দর্য হারিয়েছে এই অবৈধ মার্কেটের কারণে।

উপজেলা পরিষদ চত্বরে ২৯ হাজার ৬০০ বর্গফুট জায়গার ওপর ১২ কোটি টাকা ব্যায় করে নির্মাণ করা হয়েছে অত্যাধুনিক তিনতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ।

গত ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট মডেল মসজিদ নির্মাণ শুরু হয়। সারাদেশের ৫০টি মডেল মসজিদের সাথে গত বছরের ৩০ জুলাই পুঠিয়ার এই মসজিদটিও উদ্বোধন করেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে উদ্বোধনের প্রায় এক বছর অতিবাহিত হলেও নামাজসহ অন্যান্য কার্যক্রম শুরু হয়নি।

সারাদেশে মোট ৫৬০টি দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করেছে সরকার। এর মধ্যে রয়েছে নারী ও পুরুষদের পৃথক অজুখানা ও নামাজ আদায়ের সুবিধা, লাইব্রেরি, গবেষণা ও দীনি দাওয়া কার্যক্রম, পবিত্র কুরআন হেফজ, শিশু শিক্ষা, অতিথিশালা, বিদেশি পর্যটকদের আবাসন, মৃতদেহ গোসলের ব্যবস্থা, হজ যাত্রীদের নিবন্ধন, প্রশিক্ষণ ও ইমামদের প্রশিক্ষণ, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের।

সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধ মার্কেটের স্থাপনায় মসজিদের সৌন্দর্য ব্যাপক ভাবে নষ্ট হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ক্যানেল বন্ধ রেখে, নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করেছে পুঠিয়া উপজেলা পরিষদ। সে সময় ১৯৮৫ সাল থেকে ৩ ধাপে মোট ৫৬ টি দোকান তৈরি করে তারা। দোকানগুলো প্রতি মাসে ৭ টাকা স্কয়ার ফিট হিসাবে ১ বছরের জন্য ভাড়া দেওয়া হয় সেই সময়। সেখান থেকে প্রতি বছরে প্রায় লাখ-লাখ টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে উপজেলা পরিষদ।

শর্ত অনুযায়ী এক বছরের চুক্তিতে ভাড়া দেওয়া থাকলেও তিন-যুগ ধরে আর নবায়ন হয়নি। মার্কেটগুলো ব্যবসায়ীদের মাঝে এখনো অবৈধভাবে দখল রয়েছে। নতুন করে চুক্তি নবায়ন না করেই ব্যবসায়ীরা দোকানগুলো দখলে রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছে।

বরাদ্দ গ্রহিতারা শর্ত ভঙ্গ করে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের কাছে অবৈধভাবে ভাড়া দিয়েছে বা দোকানের পজিশন বিক্রি করে দিয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ ব্যবসায়ীদের সাথেই বরাদ্দদাতা উপজেলা পরিষদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়নি।

মসজিদ উদ্বোধনের পূর্বে পুরা মার্কেটটি অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তীতে পুরা মার্কেট অপসারণ না করে সুধু ৮টি দোকান অপসারণের পূনঃ-সিদ্ধান্ত হয়।  কিন্তু বাস্তবে মসজিদের প্রবেশপথের সিঁড়ি বরাবর মাত্র ৩টি দোকান ভাঙ্গা হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর হোসেন নির্ঝর জানায়, জায়গাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের এটা আমি শুনেছি। আমি এখানে আসার অনেক আগেই মার্কেট গুলো তৈরি হয়েছে। মার্কেট তৈরির জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি আছে কিনা তা আমার জানা নেই। অপসারণের জন্য তারা চিঠি দিয়েছে কিনা তাও আমার জানার বাইরে। তবে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন বন্ধ আছে তা জানি কিন্তু সে বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। মার্কেটগুলো উপজেলা পরিষদ নিয়ন্ত্রণ করে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের রাজশাহী নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল রহমান আঙ্কুর বলে, আমি এখানে নতুন এসেছি। অপসারণের নোটিশ করা আছে কিনা আমার জানা নেই। যদি নোটিশ করা থাকে তাহলে খুব শীঘ্রই আমরা ব্যবস্থা নিবো।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.