মঙ্গলবার | ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে কাঁদলেন পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফল স্থগিতপূর্বক পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানিয়েছেন আনারস প্রতীকের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী রোকনুজ্জামান রিন্টু। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যে ভোটের সংখ্যা দেখানো হয়েছে তাতে গরমিল রয়েছে। পুনরায় ভোট গণনার দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর তিনি আবেদন করেছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহী নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে রোকনুজ্জামান এসব কথা বলেন। এ সময় বক্তব্যের একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে রোকনুজ্জামান বলেন, গত ২১ মে নির্বাচনী প্রাচারণা শুরু হওয়ার পর থেকেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাভলুর মোটরসাইকেল প্রতীকের কর্মী-সমর্থক ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজেই বিভিন্নভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। মৌখিকভাবে ও লিখিতভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। সর্বশেষ মোটরসাইকেল প্রতীকের পোস্টারে মোটরসাইকেল কোম্পানির ব্র্যান্ডিং করা ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।

গত ৫ জুন নির্বাচন শুরুর পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী আমার পোলিং এজেন্টদের বের করে দেয় এবং প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে আমার পোলিং এজেন্টরা অভিযোগ করলে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে এবং বের করে দেয়।  কিছু কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারগণ আমার নির্বাচনী পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট গণনা করে। পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফলের শিট সরবরাহ করা হয়নি। এমনকি কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল শিটে আমার নির্বাচনী পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। অনেক কেন্দ্রেই আমার পোলিং এজেন্টদের মৌখিকভাবে জানানো ফলাফল ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রেরিত ফলাফলের মধ্যে ব্যাপক অসামঞ্জস্য ও গরমিল দেখা যায়। উপরে উল্লেখিত কেন্দ্রগুলো বাদেও অধিকাংশ কেন্দ্রে আমার বৈধ ভোটকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়। অনুরূপ ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের ক্ষেত্রেও নির্ধারিত ফলাফলের সাথে বাতিল ভোটের অসামঞ্জস্য ও গরমিল দেখা যায়। প্রদত্ত মোট ভোটের উপস্থিতি চেয়ারম্যান পদে ৪০ দশমিক ০৪ শতাংশ, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি দেখানো হয়। যাতে গরমিল পাওয়া যায়।

চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিন পদেরই বাতিলকৃত ভোটেও ব্যাপক পার্থক্য দেখানো হয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় যে বাঘা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ২০২৪ কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়নি। সার্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে আমি নিশ্চিত যে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বিজয়ী করতেই গণনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কাজে নিয়োজিত কিছু ব্যক্তিবর্গ কারচুপির আশ্রয় নিয়েছেন। এমতাবস্থায় অতিদ্রুত সকল কেন্দ্রের ভোট পুনরায় গণনার দাবি জানাই।

সংবাদ সম্মেলনে বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম মন্টু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়াহীদ সাদিক কবির, নির্বাচনী আহ্বায়ক মামুন হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.