মৃত্যুদণ্ড থেকে বাঁচতে শেষ চেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবেদন করেছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক এস তাহের হত্যা মামলায় দণ্ডিত সাবেক শিবির নেতা মিয়া মো. মহিউদ্দিন ও জাহাঙ্গীর আলম। তবে প্রাণভিক্ষার ওই আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ। এ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল জলিল বলেন প্রাণ বিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ায় এখন ফাঁসি কার্যকর করতে কোনো বাধা রইলো না।
২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি নিখোঁজ হন রাবির ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এস তাহের। নিখোঁজের দুই দিনের মাথায় ৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসার বাইরে ম্যানহোলে তাহেরের লাশ পাওয়া যায়। লাশ উদ্ধারের পরদিন অধ্যাপক তাহেরের ছেলে সানজিদ আলভী মতিহার থানায় মামলা করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন উপপরিদর্শক আচানুল কবির ২০০৭ সালের ১৮ মার্চ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন।
এতে তাহেরের বিভাগীয় সহকর্মী মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী, তাহেরের বাসভবনের তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীর, জাহাঙ্গীরের ভাই ও ছাত্রশিবিরের কর্মী আবদুস সালাম, তাঁদের (জাহাঙ্গীর ও আবদুস সালাম) বাবা আজিমুদ্দীন ও সালামের আত্মীয় নাজমুলকে অভিযুক্ত করা হয়।
অধ্যাপক তাহেরকে বাসায় হত্যা করে নর্দমায় মরদেহ ঢুকিয়ে রাখা হয় বলে পরবর্তী সময়ে মামলার সাক্ষ্য-প্রমাণে উঠে আসে।এই মামলায় ৩৯ জনের সাক্ষ্য-জেরার পর ২০০৮ সালের ২২ মে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মিয়া মো. মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, আবদুস সালাম ও নাজমুলকে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সীকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে চার আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য বিচারিক আদালতের রায়সহ মামলার সব নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত।
অন্যদিকে খালাস চেয়ে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা। ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির পর ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। এ রায়ে অধ্যাপক তাহেরের সহকর্মী মিয়া মো. মহিউদ্দিন ও ড. তাহেরের বাসার তত্ত্বাবধায়ক মো. জাহাঙ্গীর আলমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।