প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থী দলগুলো বড় সাফল্য পেয়েছে। কট্টর ডানপন্থী দলগুলোর এই সাফল্য ইউরোপের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক গতিপথে অনিশ্চয়তা যোগ করেছে।
চার দিনের এই নির্বাচন গতকাল রোববার শেষ হয়। নির্বাচনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২১টি দেশের ভোটাররা ভোট দেন। ভোটারের সংখ্যা ৩৫ কোটি।
ফ্রান্সে মেরিন লে পেনের ন্যাশনাল র্যালি পার্টি ভোটে এমন পরিমাণে আধিপত্য বিস্তার করেছে যে ম্যাখোঁ অবিলম্বে জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন।
৭২০ আসনের এই পার্লামেন্টে মধ্যপন্থী, উদার ও সমাজতান্ত্রিক দলগুলো মিলে সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখতে যাচ্ছে। কিন্তু বিশেষ করে ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রিয়ার নেতাদের জন্য এই নির্বাচনের ফলাফল একটা বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে।
ফ্রান্সে ডানপন্থী মেরিন লে পেন প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল র্যালি পেতে যাচ্ছে প্রায় ৩৩ শতাংশ ভোট। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাখোঁর রেনেসাঁ পার্টি পেতে যাচ্ছে ১৫ শতাংশ ভোট। এই ফলাফল দেখে আগাম জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন ম্যাখোঁ। তিনি দেশটির পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন। এই পদক্ষেপকে ম্যাখোঁর জন্য একটি বড় রাজনৈতিক ঝুঁকি হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ম্যাখোঁর মতো জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের জন্যও এই নির্বাচন দুঃসংবাদ হয়ে এসেছে। নির্বাচনে তাঁর সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি সবচেয়ে বাজে ফল করেছে। অতি ডানপন্থী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।
অস্ট্রিয়ায় অতি ডানপন্থী ফ্রিডম পার্টি প্রায় ২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল পিপলস পার্টি ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে।
অবশ্য ভালো ফল করেছে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির ব্রাদার্স অব ইতালি।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থীদের উত্থানকে উদ্বেগের কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
বিশ্বজুড়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে ইউরোপীয় জাতিসত্তার আয়না বলা হয়ে থাকে। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনে কোনো দল থেকে ব্যক্তিবিশেষ সরাসরি ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় করতে পারেন না। শুধু দলভিত্তিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রতিটি দল ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য তালিকা তৈরি করে। যেকোনো দল তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত অনুযায়ী সংসদ সদস্যপদ লাভ করে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সংসদ সদস্য কোটা নির্ধারিত হয় দেশগুলোর লোকসংখ্যার অনুপাত অনুযায়ী। সেই হিসাবে ৮ কোটি ৩৮ লাখ বাসিন্দা-অধ্যুষিত জার্মানির লোকসংখ্যার অনুপাতে সর্বোচ্চ আসনসংখ্যা ৯৬। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্যরা সব সময় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।