নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সরকারদলীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমকে দলের মধ্যে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
আজ সোমবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে কুমারপাড়ায় থাকা মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন তারা।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল হত্যাকাণ্ডের পেছনে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের এমপি আসাদুজ্জামান আসাদকে মদদ দাতা উল্লেখ করে এমপি শাহরিয়ার আলমের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. আসলাম সরকার।
তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের অবদানকে খাটো করতে এবং আধুনিক রাজশাহীর রূপকার তার ছেলে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে কতিপয় গণধিকৃত, জনবিচ্ছিন্ন, সুযোগসন্ধানী হিসেবে আখ্যায়িত ব্যক্তিবর্গ চক্রান্তে-ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন। এরা সব সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে কুৎসা রটনায় লিপ্ত আছে।
তিনি আরও বলেন, খায়রুজ্জামান লিটন সম্পর্কে এমপি শাহরিয়ার আলমের বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়িয়ে পড়ার ফলে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন। রাজপথে নেমে এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন, কুশপুতুল দাহ ও মিছিল-মিটিং সমাবেশের মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। এখনো বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ অব্যাহত আছে। এমপি শাহরিয়ার আলমের এমন দম্ভোক্তির প্রতিবাদে এরই মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তার বিচারের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। মানুষের এই স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে আমরা অভিবাদন জানাই।
আওয়ামী লীগ নেতা আসলাম সরকার বলেন, ছাত্রলীগের কর্মী থেকে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলের সঙ্গে খায়রুজ্জামান লিটনের রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও পুরনো। বাবুল আহত হওয়ার পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার চিকিৎসার সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখেন খায়রুজ্জামান লিটন। নিহতের সন্তানদের অভিভাবকের দায়িত্ব নিয়ে পাশে দাঁড়ান। কিন্তু শাহরিয়ার আলম লিটনকে আসামি করে বাবুল হত্যায় নতুন করে মামলার ঘোষণা দেন। ষড়যন্ত্রকারী শাহরিয়ার আলমের এই ঘোষণায় আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মী ও জনগণের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণের প্রশ্ন তাহলে কী ষড়যন্ত্রকারী শাহরিয়ারদের হাতেই ধ্বংস হবে আওয়ামী লীগ?
তিনি বলেন, উচ্চাভিলাষী শাহরিয়ার আলম আওয়ামী লীগের নীতি ও আদর্শের পরিপন্থি। তিনি দলের শৃংঙ্খলাবিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও জনসাধারণকে শান্ত থাকার জন্য, ধৈর্য ধারণ করার জন্য ও কোনো প্রকার উস্কানি বা প্ররোচনায় কান না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শাহরিয়ার আলমদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের উত্তর দেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, সহ-সভাপতি ডা. তবিবুর রহমান শেখ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন।
উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, সৈয়দ শাহাদত হোসেন, নাঈমুল হুদা রানা, দপ্তর সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম বুলবুল, প্রচার সম্পাদক দিলীপ কুমার ঘোষ, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মুসাব্বিরুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক জিয়া হাসান আজাদ হিমেল, শ্রম সম্পাদক আব্দুস সোহেল, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক কামারউল্লাহ সরকার কামাল।
এছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।