প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্বে অভিবাসনবিরোধী ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সমালোচক মারিন লু পেনের কট্টর ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন) ঐতিহাসিক সাফল্য অর্জন করে জয় পেতে যাচ্ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, তবে নির্বাচনের দুই পর্ব মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত তারা জয় পাবে কি না, তা আগামী সপ্তাহের রান-অফ ভোটের আগের দিনগুলোতে হতে যাওয়া রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর নির্ভর করছে।
রোববারের ভোটের পর ইপসোস, ইফপ, ওপিনিয়ন ওয়ে এবং এলাবের পরিচালিত বুথ ফেরত জরিপে দেখা গেছে, আরএন প্রায় ৩৪ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছে। এই পরিমাণ ভোট নিয়ে তারা বামপন্থি ও মধ্যপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বিদের চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোনের টুগেদার অ্যালায়েন্স ২০ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ২৩ শতাংশ এবং বামপন্থিদের জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনএফপি) প্রায় ২৯ শতাংশ ভোট পেতে যাচ্ছে।
এ ফলাফল প্রেসিডেন্ট মাক্রোনের জন্য একটি বড় ধরনের বিপর্যয়। চলতি মাসের প্রথমদিকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে তার মনোনীত প্রার্থীরা আরএনের প্রার্থীদের কাছে পরাাজিত হওয়ার পর আগাম এ নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন মাক্রোন। কিন্তু স্বাভাবিক নিয়মে ২০২৭ সালের আগে ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল না আর এ নিয়ে মিত্ররা মাক্রোনের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে আছে।
বুথ ফেরত জরিপের এই ফলাফল নির্বাচনের আগে করা জরিপগুলোর সঙ্গে মিলে গেছে। আর এ ফলাফল লু পেনের হর্ষোৎফুল্ল সমর্থকদের প্রত্যাশার সঙ্গেও মিলে গেছে। তবে আগামী রোববারের রান-অফ ভোটের পর কট্টর ডানপন্থি আরএন ইউরোপন্থি প্রেসিডেন্ট মাক্রোনের সঙ্গে সহাবস্থান করে সরকার গঠনে সক্ষম হবে কি না, তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
ফ্রান্সের অনেকের কাছে বহুদিন ধরে অচ্ছুৎ হয়ে থাকা আরএন আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন ক্ষমতার সবচেয়ে কাছাকাছি আছে। যে দলটি বর্ণবাদ ও ইহুদিবিদ্বেষের জন্য পরিচিত সেই আরএনের ভাবমূর্তি এখন স্বচ্ছ করার কথা বলছেন লু পেন, তার এই কৌশল ব্যয়বহুল জীবনযাত্রা ও অভিবাসী নিয়ে মাক্রোনের ওপর বিরক্ত ভোটারদের ক্ষেত্রে কাজে দিয়েছে।
আগামী সপ্তাহে আরএন জয়ী হয়ে ক্ষমতায় যাবে কি না, তা নির্ভর করছে মধ্যবর্তী দিনগুলোতে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিরা কী রাজনৈতিক সমঝোতায় পৌঁছায় তার ওপর। অতীতে আরএনকে ক্ষমতার বাইরে রাখতে মধ্য-ডান ও মধ্য-বামপন্থি দলগুলো জোট বেঁধেছিল। কিন্তু এবার ‘রিপাবলিকান ফ্রন্ট’ নামের ওই রকম কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নিশ্চিত না।
প্রথম পর্বের ভোটে কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পেলে শীর্ষে থাকা দুই প্রতিদ্বন্দ্বী স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বিতীয় পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতার যোগ্যতা অর্জন করবেন। তাদের পাশাপাশি যে প্রার্থীদের পক্ষে সাড়ে ১২ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার রয়েছে তারাও দ্বিতীয় পর্বে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই পর্বে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থীই জয়ী হবেন।
যদি দ্বিতীয় পর্বের ভোটে জিতে আরএনের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হয় তাহলে দলটির সভাপতি জগদান বাগদেলা হবেন ফ্রান্সের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।