বৃহস্পতিবার | ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে বৃষ্টিতে নগরে দুর্ভোগ, গ্রামে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে রাজশাহী নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। গত শনিবার থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও মঙ্গলবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে যায়। তখন নগরবাসীকে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়।

আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, এমন বৃষ্টিপাত আগামী কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। যদিও নগরবাসীর জন্য এই বৃষ্টি দুর্ভোগের কারণ হলেও কৃষকের জন্য তা আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

গতকাল বুধবার আবহাওয়া অফিস জানায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ৫৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ। এর আগে গত শনিবার রাজশাহীতে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। রবিবার ৩০ দশমিক ৬ মিলিমিটার ও সোমবার ৭ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক দিন এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে দিনের তাপমাত্রা এখনো অপরিবর্তিত থাকবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিপাতের কারণে রাজশাহী নগরীর উপশহর, উপশহর নিউ মার্কেট, সপুরা করবস্থানের উত্তরের সড়ক ও সাহেব বাজারের একটি সড়কে পানি জমে যায়। এতে ওই এলাকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েন। এ ছাড়া পথচারীরাও চরম দুর্ভোগে পড়েন। তবে কয়েক ঘণ্টা পর পানি নেমে গেছে।

নগরীর উপশহর এলাকায় আমজাদ আলী বলেন, ‘মঙ্গলবার প্রবল বর্ষণে উপশহর এলাকায় পানি জমে গেলে দুর্ভোগে পড়তে হয়। রাত পর্যন্ত পানি জমে থাকলেও সকালে তা নেমে যায়। এখানে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর ইসলাম তুষার বলেন, রাজশাহী শহরে মোট ৫৬৫ কিলোমিটার ড্রেন রয়েছে। পানি জমছে নগরীর ২৩ ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকায়। এ ছাড়া উপশহরেও পানি জমছে। এক ঘণ্টার মতো পানি থাকছে। মূলত ড্রেনগুলোতে মাটি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। এ জন্য পানি যেতে সময় লাগছে। এগুলো সরানোর কাজ চলছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।

বৃষ্টিতে নগরবাসী যখন দুর্ভোগে পড়েছেন, তখন গ্রামের কৃষকরা ফেলেছেন স্বস্তির নিশ্বাস। অনাবৃষ্টির কারণে খেতের ফসলের সেচ নিয়ে এতদিন তারা দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তাদের জমিতে এখন ধান, পাট, আখ ছাড়াও বিভিন্ন সবজি রয়েছে। ওই ফসলগুলোতে পানির প্রয়োজন ছিল। প্রাকৃতিক উপায়ে বৃষ্টি সেই অভাব পূরণ করল।

তানোর উপজেলার কৃষক ফজলুল করিম বলেন, ‘দীর্ঘ খরা ও অনাবৃষ্টিতে ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে গিয়েছিল। এতে বীজতলা তৈরিসহ ধান চাষ নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। তবে গত দুই দিনের বৃষ্টিতে জমি চাষের উপযোগী হয়েছে। অনেক বড় লোকসান থেকে আমরা মুক্তি পেলাম।’

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) উম্মে ছালমা বলেন, দীর্ঘদিন পর রাজশাহীতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফসলের জন্য ভালো হয়েছে। কৃষকরা এখন জমিতে ধানের বীজ ফেলছেন। এ ছাড়া পাটের জন্য বৃষ্টি ভালো বার্তা দিয়েছে। জমিতে কৃষকের ক্ষতি হওয়ার মতো কোনো ফসল নেই। এ ছাড়া বৃষ্টিপাতের ফলে বিভিন্ন শাকসবজি ভালো হবে। বৃষ্টি না হলে সেচ দিতে কৃষকদের খরচ বেড়ে যেত। তাই এই বৃষ্টি কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.