বৃহস্পতিবার | ৯ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণ যাচ্ছে ভারতে, আসছে মাদক

প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ রাজশাহীর সীমান্ত দিয়ে সোনা চোরাচালান বাড়ছে দিন দিন। মাঝেমধ্যে দু-একটি চালান ধরা পড়ছে। গ্রেপ্তারও হচ্ছে সোনা বহনকারীরা। তবে আড়ালেই রয়ে যাচ্ছে মূল হোতারা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, বড় চালান আনার পর অল্প অল্প করে বহনকারীদের মাধ্যমে ভারতে সোনা পাচার করা হচ্ছে। পাচারের নতুন রুট হয়ে উঠছে রাজশাহী সীমান্ত। এই সীমান্ত দিয়ে সোনা যাচ্ছে আর আসছে মাদক।

সবশেষ গত ৩০ জুন ৮১ ভরি সোনার একটি চালান ধরা পড়ে রাজশাহীতে। সেদিন গ্রেপ্তার হন দেলোয়ার হোসেন (৩৬) নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে। ৩০ জুন দুপুরে রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা থানার বশড়ী এলাকা থেকে সোনাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল। এ সময় আরও দুজন পালিয়ে যান।

এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, সোনাসহ যে ব্যক্তি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন, তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নাম বলেছিলেন। তবে পুলিশের করা মামলায় ওই কাউন্সিলরের নাম নেই।

৩০ জুনের সোনা চোরাচালানের ঘটনায় ডিবি পুলিশের পক্ষ থেকে কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন নগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মশিয়ার রহমান। গ্রেপ্তার দেলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থলে কোনো কাউন্সিলরের নাম বলেছিলেন কি না তা জানেন না বলে দাবি করেন মশিয়ার রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি বলেছেন, হেলমেট পরিহিত অচেনাএক ব্যক্তি তাঁকে সোনাগুলো ভারতে পাচারের জন্য দিয়েছিল। ওই হেলমেট পরিহিত ব্যক্তিকে তিনি চেনেন না।’

এর আগে গত ১ এপ্রিল রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে থেকে ৯টি সোনার বারসহ কামরুজ্জামান ডাবলু (৬০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। ডাবলুর বাড়ি রাজশাহীর পবা উপজেলার আলীমগঞ্জে। তিনি এই সোনা কোথায় পেয়েছিলেন, সে তথ্য এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। ডাবলুর বিরুদ্ধে করা মামলাটি ডিবি পুলিশই তদন্ত করছে।

রাজশাহী সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়া সোনার চালান ভারতের মুশির্দাবাদেও ধরা পড়ছে। সম্প্রতি আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরে বলা হয়েছে, কাঁটাতারহীন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনা পাচার থেমে নেই। ৬ জুলাই রাজশাহী সীমান্তের বিপরীতে ভারতের জলঙ্গী থেকে ৫৬৫ গ্রাম সোনা জব্দ করা হয়। বাইসাইকেলের রডের ভেতর ঢুকিয়ে এই সোনা পাচার করা হচ্ছিল। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে ধরতে গেলে তিনি বাইসাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। ওই যুবকের বাড়ি জলঙ্গীর চরপরশপুরে। তিনি পদ্মার শাখানদী পেরিয়ে সোনা নিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডের দিকে যাচ্ছিলেন।

বাংলাদেশের তদন্ত-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সোনার বড় চালান আসার পর ঢাকা থেকে এর কিছুটা রাজশাহীতেও আসছে। এরপর অল্প অল্প করে রাজশাহীর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচার হচ্ছে। সোনার বদলে ভারত থেকে হেরোইন ও ফেনসিডিলের চালান আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মশিয়ার রহমান বলেন, ‘যারা ধরা পড়ছে, তারা বহনকারী। অল্প করে সোনা তাদের পাচারের জন্য দেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে এটাই মনে হচ্ছে, বড় চালান আসার পর ছোট ছোট করে পাচার করা হচ্ছে। কিন্তু ওই বড় চালানগুলো কারা আনছে, তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, বহনকারীরাও তাদের চেনে না। তারা শুধু টাকার জন্য বহন করছে।’

রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বর্ণের চালান ধরতে আমাদের গোয়েন্দারা কাজ করছেন। সে জন্যই মাঝে মাঝে সোনার চালান ধরা পড়ছে। এগুলোর নেপথ্যে কারা রয়েছে, তা তদন্ত কর্মকর্তারা খুঁজছেন। নিশ্চয় তাদের সামনে আনা যাবে।’ সূত্রঃ আজকের পত্রিকা

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.