নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবিঃ সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা। তবে এদিন স্বল্প সময়ের মধ্যে কর্মসূচি শেষ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
একই সময়ে এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দীন একাডেমিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায় ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মীকে। এরপর ক্যাম্পাসে শোডাউনও করেন তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকাল ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তুলনামূলক কম শিক্ষার্থী নিয়েই তারা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। একপর্যায়ে কর্মসূচির মাঝ দিয়ে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীকে একযোগে হেঁটে চলে যেতে দেখা যায়। পরে আরও কিছু ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে প্যারিস রোডের পাশে এবং মমতাজ উদ্দীন একাডেমিক ভবনের সামনের আমবাগানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। কিছু সময় পরপর হর্ন বাজিয়ে দু-একজন ছাত্রলীগ কর্মীকে আন্দোলনরতদের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়েও যেতে দেখা যায়। তবে এর মাঝেও কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়া চালিয়ে যান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তবে অন্যান্য দিনের মতো আজ তেমন স্লোগান দিতে দেখা যায়নি আন্দোলনকারীদের।
কর্মসূচিতে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের সাফায়েত নামের এক শিক্ষার্থী সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘বর্তমানে সব শিক্ষার্থী কোটা এবং প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে হতাশ। সেজন্য সবাই এই আন্দোলনে অংশগ্রহণের চেষ্টা করছেন। যারা পারছেন তারা আসছেন।’
রাবির কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আমানুল্লাহ খান বলেন, ‘যারা রাষ্ট্র চালাবেন, তাদের কোটায় নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টা কীভাবে মানা যায়? দক্ষ মানবসম্পদ নিয়োগ দেওয়া না হলে রাষ্ট্র টিকবে কীভাবে? রাষ্ট্র তো ধসে পড়বে। প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা একটা জাতিকে শুরু থেকে গড়ে তোলে। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি ৯০-৯৫ ভাগ কোটা দেওয়া হয়, তাহলে এ রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য কোনও বহিঃশত্রুর ষড়যন্ত্র করার দরকার নেই।’
পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়ে আরেক সমন্বয়ক রেজোয়ান গাজী মহারাজ বলেন, ‘আমরা রুয়েট, রাজশাহী কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। আগামী দিন থেকে সবাই একত্র হয়ে বড় ধরনের কর্মসূচি দেবো। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ১১টায় আমরা আবার প্যারিস রোডে অবস্থান করবো। সেখান থেকে আমরা রুয়েটের সঙ্গে একত্র হয়ে রাজপথ কিংবা রেলপথ অবরোধ করতে পারি।
এদিকে, কোটা আন্দোলন শেষে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে শোডাউন দিতে দেখা যায়। কোটা সংস্কার আন্দোলনের কাছাকাছি অবস্থান নেওয়া এবং শোডাউন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, ‘এটি আমাদের সাংগঠনিক কাজের অংশ ছিল। আমরা কয়েকদিন পরে হলে কর্মিসভা করবো। সেটি কীভাবে করা যায়, সেই প্রসঙ্গেই সবাই কথা বলছিল। কোটা আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের কর্মসূচির কোনও সম্পৃক্ততা নেই।’