নিজস্ব প্রতিবেদক, রাবিঃ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সুবিধা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্যের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক বিশাল সমাবেশ নিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগদান করেন।
এ সময় ‘তুমি নও আমি নই রাজাকার রাজাকার, কে বলছে কে বলেছে সংবিধান সংবিধান’, ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’, ‘চেয়েছিলাম অধিকার হয়ে গেলাম রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে সরকার সরকার’ স্লোগানে বিশ্ববিদ্যালয় উত্তাল করে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সমাজকর্ম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আলফাজ বলেন, আমরা এতদিন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। রাষ্ট্রের যাদের কাছে আমাদের দাবি তারাই যদি আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করেন তাহলে আমরা যাব কোথায়? প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে সারা দেশের ছাত্রসমাজ গতকাল রাতেই তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে আমরা সকল শিক্ষার্থীরা আজকের এ কর্মসূচি পালন করছি। প্রধানমন্ত্রী তার ভুল বুঝে ছাত্রসমাজের দাবি মেনে নেবে বলে আমি আশাবাদী।
রুয়েট শিক্ষার্থী আলমাস হোসাইন বলেন, বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বাংলাদেশের ছাত্রসমাজের জন্য অপমানজনক। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এ ধরনের মন্তব্য আমরা কখনোই আশা করি না। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছি অথচ আমাদেরকে রাজাকার বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে ৷ আমরা ছাত্রসমাজ এই মন্তব্যের বিরোধিতা করি এবং সকল গ্রেডে কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কার চাই, সেই সঙ্গে কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই আন্দোলনকে ঘিরে ছাত্রদের ওপর যে সন্ত্রাসী হামলা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে তার জবাব চাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ফাহিম রেজা নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা গতকাল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শান্তশিষ্ট হয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। সেটি রাষ্ট্রপতি বরাবর ফরোয়ার্ড করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটা সংস্কার করবে এমনটাই দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মন্তব্য করেছেন সেটি বাংলাদেশের সকল ছাত্রসমাজ প্রত্যাখ্যান করেছে। যার নমুনা গতকাল রাতেই সবাই দেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যের জন্য সারা ছাত্রসমাজের কাছে মাফ চাওয়া উচিত।
এ সময় প্রায় বিভিন্ন হলের আট শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।