নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলা পরিষদের অপসারিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শেখ হাবিবা সন্তানের পড়াশোনার স্বার্থে সরকারি কোয়ার্টারে থাকতে চান। পাশাপাশি পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতার জন্য মাসিক সম্মানী ভাতাও পেতে চান। এ দাবি নিয়ে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
নগরের কাদিরগঞ্জে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন শেখ হাবিবা। তিনি উপজেলা কৃষক লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। একবার তিনি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে প্রথমবার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেরে তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাতটি মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন। সাতবার জেলে গিয়েছেন। এখনো দুটি মামলা বিচারাধীন। তাঁর স্বামী একজন চায়ের দোকানি। ৫ টাকা দামের চা বিক্রির টাকায় তিনি রাজনীতি করেন। এবার নির্বাচনে দল-মত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে ভোট দিয়েছেন। সর্বোচ্চ ৪২ হাজার ৯৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। দায়িত্ব নেওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই গত সোমবার দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে সরকার।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে তাঁর সমর্থন রয়েছে জানিয়ে শেখ হাবিবা বলেন, ‘মোহনপুর থানায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিস পুড়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিস, ভূমি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। কিন্তু আমার ওপর হামলা হয়নি। আমি পালাইনি। কারণ সবাই আমাকে ভালোবাসে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর আমি উপজেলা সদরে সরকারি কোয়ার্টারে উঠেছি। আমার ছোট্ট মেয়েটাকে মডেল স্কুলে ভর্তি করেছি। এ জন্য আমি এখনো সরকারি কোয়ার্টারে থাকতে চাই। আমাকে এই সুযোগটা দেওয়ার জন্য আমি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাই।
পদ থেকে অপসারিত হলেও মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়ারও দাবি জানান শেখ হাবিবা। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো পড়াশোনা করি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে চতুর্থ বর্ষ চলছে। আমার স্বামী মাসুদ রানা একজন চা দোকানি। চা বিক্রি করে সংসার চালান। আমি সম্মানী ভাতার টাকাটা পেলে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা থাকত। আমার কিছুই নেই। আমি সরকারের কাছে এটা চাই।
সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাবিবার মা ঘাষিগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক মহিলা সদস্য মিনা বেগম উপস্থিত ছিলেন। দুই শিশুকন্যাকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শেখ হাবিবা।