প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ চাল আমদানিতে শুল্ক কমাতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। ৩০ সেপ্টেম্বর দেয়া ওই চিঠিতে বিদ্যমান শুল্ককর ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, খাদ্যের নিরাপত্তা মজুত গড়ে তোলা ও কৃষকদের উৎসাহমূল্য দিতে চলতি বোরো মৌসুমে ৫ লাখ টন ধান ও ১৪ লাখ ৭০ হাজার টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭০ টন ধান ও ১২ লাখ ৫৫ হাজার ৪৯৭ টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি সংরক্ষণাগারে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৭৪০ টন চাল ও ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯২৮ টন গমসহ মোট ১৭ লাখ ৫৪ হাজার ১৯৯ টন খাদ্যশস্য মজুত আছে।
খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সম্প্রতি দেশের ১৪ জেলায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। ফলে আউশ, রোপা আমন এবং আমন বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। এতে আমন ওঠার পরও চালের দাম বেড়ে যেতে পারে। তাছাড়া, গম রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা কারণে খাদ্যশস্যের দাম বেড়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে চালের বাজার স্থিতিশীল রেখে ভোক্তা পর্যায়ে মূল্য সহনীয় রাখার লক্ষ্যে সরকারি নিরাপত্তা মজুত গড়ে তোলার স্বার্থে সরকারি ও সারাদেশে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির প্রয়োজন হতে পারে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ইতোমধ্যে সরকারি পর্যায়ে প্রয়োজনের সময়ে ৫ লাখ টন চাল আমদানির জন্য প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চালের মূল্য দেশিয় বাজারের চেয়ে আরও বেশি। এ কারণে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে চাল আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ক (কাস্টমস ডিউটি ২৫ শতাংশ, রেগুলেটরি ডিউটি ২৫ শতাংশ, এডভান্স ইনকাম ট্যাক্স ৫ শতাংশ, এডভান্স ট্যাক্স ৫ শতাংশ, ইন্সুরেন্স ১ শতাংশ ও ল্যান্ডিং চার্জ ১ শতাংশ ও ডিএফ ভ্যাট শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ) ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শুধু রেগুলেটরি ডিউটি ৫ শতাংশ পুনঃনির্ধারণ করা যায়। ভারত চাল রপ্তানীর উপর বিদ্যমান শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।
এতে করে চাল রপ্তানির উপর ভারতের ১০ শতাংশ শুল্ক ও চাল আমদানির উপর বাংলাদেশের ৫ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হয়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে চাল আমদানি করতে হবে। তা সত্বেও আমদানিকারকরা অভ্যন্তরীণ চাহিদা থাকায় চাল আমদানীতে উৎসাহিত হবে বলে আশা করা যায়।
এমতাবস্থায় চালের বাজারমূল্য ভোক্তা সাধারণের জন্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসাসহ মূল্য স্থিতিশীল রাখার স্বার্থে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল ও নন সেন্টেড আতপ চাল আমদানির উপর বিদ্যমান শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শুধু রেগুলেটরি ডিউটি ৫ শতাংশ নির্ধারণ করার পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।