প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলায় মসজিদের ইমামকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে গণপিটুনিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে সদর উপজেলার শিমুলতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকের নাম মিজানুর রহমান মিজু (৩০)। শিমুলতলা গ্রামের তরিকুল ইসলামের ছেলে এবং মাদক কারবারি ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টার দিকে মিজু নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই এলাকার মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ হোসেনকে ছুরিকাঘাত করেন। তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে এলে আহত হন একই গ্রামের হারুনুর রশিদ। পরে স্থানীয়রা মিজুকে ধরে গণপিটুনি দেন। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জোবায়ের হোসেন জানান, বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের শিমুলতলা বালুচর মসজিদের ইমাম দীর্ঘদিন ধরে মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে একই গ্রামের নেশাগ্রস্ত অবস্থায় মিজানুর শিমুলতলা বালুচর গ্রামসংলগ্ন নদীতে নৌকা থেকে নামার সময় ইমামকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় ইমাম পিঠে ও হাতে জখম হয়। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শী মো. হারুন ইমামকে উদ্ধার করতে গেলে তাঁকেও মিজানুর ছুরিকাঘাত করেন। এতে গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে নেশাগ্রস্ত মিজুকে গণপিটুনি দিলে তিনিও গুরুতর আহত হন।
এসআই জানান, স্থানীয়রা ইমাম ও তাঁর সহযোগী এবং গণপিটুনিতে আহত মিজানুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। এ সময় চিকিৎসক মিজানুরকে মৃত ঘোষণা করেন এবং মসজিদের ইমামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
মিজানুর দীর্ঘদিন ধরেই মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি তাঁর বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দেওয়ায় স্থানীয় মাদকবিরোধী কমিটির ওপর ক্ষুব্ধ হন তিনি। এ কারণেই ইমামের ওপর হামলা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান এসআই।
বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মেহেদী হাসান বলেন, খুতবাসহ পাড়া–মহল্লায় মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন ইমাম। মূলত এই কারণে ক্ষিপ্ত হন মিজানুর। পরে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক ফরহাদ আলী সুইট বলেন, নিহত ব্যক্তির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিভিন্ন লোহা দিয়ে জখম করে হত্যা করা হয়েছে।