নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ক্ষমতার পালাবদলের তিন মাস পেরোলেও বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া স্বাভাবিক করেনি প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ঘিরে আওয়ামী লীগ সরকার পতন পরবর্তী প্রেক্ষাপটে মেডিকেল বা জরুরি ভিসা বাদে বাংলাদেশিদের অন্য কোনো ভিসা দিচ্ছে না দেশটির সরকার। এমনকি বাংলাদেশিদের ভ্রমণ ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া শীঘ্রই স্বাভাবিক হচ্ছে না বলেও জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।
এদিকে চিকিৎসার জন্য ভিসা পেতেও হিমশিম খাচ্ছেন বাংলাদেশি আবেদনকারীরা। পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা, ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তা ও বিনোদনপ্রেমীরাও পড়েছেন চরম বেকায়দায়। এই সংকট সমাধানে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন রাজশাহীর বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ। বুধবার সকালে রাজশাহী ডিসি অফিসে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহা. যোবায়ের হোসেন। এসময় রাজশাহীর আমদানি-রপ্তানিকারক, ব্যবসায়ী, নারী উদ্যোক্তা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিকে উল্লেখ করা হয়, পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে ভারতের চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় রাজশাহী তথা সমগ্র দেশের মধ্যবর্তী শ্রেণীর মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারত ভ্রমণ করে থাকে। কিন্তু বিশেষ মুহূর্তে ভারতীয় ভিসা না পাওয়ার ফলে অনেক রোগী উন্নত চিকিৎসা গ্রহণে ব্যর্থ হচ্ছে।
এছাড়াও রাজশাহী বিসিকের অধিকাংশ ব্যবসা আমদানি ও রপ্তানি নির্ভর। প্রতি বছর কয়েকশ কোটি টাকা ভারতের সাথে আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা হয় যা ভিসা জটিলতার কারণে হুমকির মুখে পড়েছে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসার অধিকাংশ পণ্য, কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি, কেমিক্যাল, কটন ফাইবার, জ্বালানী ও অন্যান্য উপকরণের সিংহভাগ ভারত থেকে নিয়ে আসা হয়। ফলে এই অঞ্চলের ব্যবসায়ী ও নারী উদ্যোক্তাদের নিয়মিত ভারত ভ্রমণের প্রয়োজন হয়। ভারতে দুই বাংলার মানুষের অনেক স্মৃতি বিজড়িত। ভারতে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন আছে, ফলে বাংলাদেশের মানুষ একটু অবসর পেলেই ভারতে অবকাশ যাপন করতে সাচ্ছন্দবোধ করে যা বর্তমান সময়ে জটিল হয়ে পড়েছে। তাই আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা স্বাভাবিক রাখতে ভিসা সহজীকরণ অত্যাবশ্যক।
দেশের সাধারণ নাগরিকদের প্রয়োজনীয়তা বিশেষ করে ব্যবসা, চিকিৎসা, কৃষি, জ্বালানী প্রভৃতি ক্ষেত্র বিবেচনা করে ভারতীয় ভিসা প্রাপ্তি বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়।
এ ব্যাপারে রাজশাহীস্থ ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার বলেন, আমার কিছু বলার নেই। এটি অভ্যন্তরীণ বিষয়। যখন এটি আমাদের কাছে পৌঁছাবে তখন আমরা তা দেখবো।
স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিসিকের সভাপতি হাসেন আলী, বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী, রাজশাহী ওয়েব’র সভাপতি আঞ্জুমান আরা পারভীন, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, রাজশাহী নারী উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনের সভাপতি সেলিনা বেগম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন