নিজস্ব প্রতিবেদক: তাবলীগের বিশ্ব আমীর ও ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে বাংলাদেশের বিশ্ব ইজতেমায় আসতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তার অনুসারীরা।
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা সোমবার (২ ডিসেম্বর) রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর এই স্মারকলিপি দেন তারা। এ দিন সকাল ১০টার দিকে মাওলানা সাদের তিন শতাধিক অনুসারি রাজশাহীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। এরপর একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের কাছে স্মারকলিপিটি তুলে দেন।
এ সময় তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা মারকাজের আমির ডা. মুহাম্মাদ আমীনুল ইসলাম, সাথী ডা. মুরশেদুল আলম, আতাউর রহমান মানিক, মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ গোলাম আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর টঙ্গির বিশ্ব ইজতেমায় মাওলানা সাদকে আসতে দেওয়ার দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিতে বলা হয়, কোনরূপ যৌক্তিক কারণ ছাড়াই দাওয়াত ও তাবলীগের বিশ্ব আমীর হযরত মাওলানা সা’দ (দা.বা.) বাংলাদেশে আসতে পারছেন না। বিগত ৭ বছর যাবৎ আমরা কোরআন ও হাদিসের আলোকে তার মূল্যবান বক্তব্য শোনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। অথচ তিনি ইতোপূর্বে বিশ্ব ইজতেমার প্রধান বক্তা ছিলেন এবং আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করতেন। তিনি বাধাহীনভাবে সারাবিশ্বে তাবলিগের কাজে সফর করে চলেছেন।
মাওলানা সা’দের অনুসারিদের স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বিগত ৭ বছর যাবৎ মাওলানা জুবায়েরপন্থীগণ আমাদের মূলধারার সাথীদের মসজিদে দাওয়াতের কাজ বন্ধ করার জন্য বিভিন্নভাবে মারপিট, হত্যা, জুলুম-নির্যাতন এবং কুৎসা রটনা ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন, যা ইসলামী শরিয়ত, বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লংঘন। তাই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠুভাবে বজায় রাখার স্বার্থে দেশের সকল মসজিদে বাধাহীনভাবে তাবলিগের কাজ পরিচালিত হওয়ার ব্যাপারে সুস্পষ্ট আদেশ জারির জন্যও দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ভারতীয় আলেম মাওলানা সাদের পুরো নাম সাদ কান্ধলভী। তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ইলিয়াছ (রহ.)-এর ছেলে মাওলানা হারুন (রাহ.)। তার ছেলে হলেন মাওলানা সাদ। তাবলীগ জামাতের বিশ্ব-মারকাজ বা কেন্দ্র হলো দিল্লির ‘নিজামুদ্দিন মারকাজ। এই কেন্দ্রের দায়িত্বে যিনি থাকেন তাকেই বিশ্ব-তাবলিগের আমির বলা হয়। সে হিসেবে বর্তমানে তাবলিগের আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা সাদ।
তার কিছু বক্তব্য ও নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে আলাদা হয়ে যায় তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম। এর জেরে ২০১৮ সাল থেকে আলাদাভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। বিভক্তির জেরে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেন না মাওলানা সাদ।