সোমবার | ২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখল বাংলাদেশ

 

 

প্রিয় রাজশাহী ডেস্ক: অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের গত আসরে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। এবারও সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখল লাল-সবুজের দল। এবারের ফাইনালে রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের যুবারা। গত আসরে দুবাইতে যা করেছিলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বিরা, সেটাই এবারে করে দেখালেন আজিজুল হাকিম তামিমের দল।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৯.১ ওভারে ১৯৮ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। পুঁজিটা ছোট হলেও প্রবল আত্মবিশ্বাস আর দুই পেসার ইকবাল হোসেন ও আল ফাহাদের পেস তাণ্ডবে সমতল পথে হোঁচট খায় ভারত। লক্ষ্য তাড়ায় ১৩৯ রানে থামে তারা।

আগের আসরের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের সামনে জবাব দিতে নেমে কোণঠাসা হয়ে যায় ভারত। ভারতের ইনিংসের শুরুতেই চাপে ফেলে দেন আল ফাহাদ। দলীয় ৪ রানেই আয়ুশ মহাত্রেকে দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এই পেসার। শুরুর চাপ সামলাতে না পারা রেকর্ড ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কেপি কার্তিকেয়া ছাড়া আর কেউই তেমন থিতু হতে পারেননি। তবে অনেকটা সময় ধরেই বাংলাদেশকে ভুগিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক মোহাম্মদ আমান। তাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের পথটা সহজ করে দেন টাইগারদের অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিম।

 

 

 

 

 

ছোট পুঁজি নিয়ে এক স্পেলে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন ইকবাল হোসাইন ইমন। কার্তিকেয়া এবং নিখিল দুজনেই ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে। এক ওভার পরেই ফের তার আঘাত। এই দফায় আউট হলেন হারভানশ পানগালিয়া। এই দফায়ও উইকেটের পেছনেই গিয়েছে ক্যাচ। মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতের ব্যাটিং লাইনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেন এই পেসার।

ভারতের দলীয় সংগ্রহ যখন ৯২, তখন আঘাত হানেন আল ফাহাদ। কিরান করমালেকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানিয়ে ভারতের সপ্তম উইকেট তুলে নেন এই পেসার। এক প্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়তে থাকলেও গলার কাটা হয়ে তখনো টিকে ছিলেন ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মেদ আমান। বাংলাদেশ সেই কাটা উপড়ায় ৩২তম ওভারে। বাংলাদেশ অধিনায়ক আজিজুল হাকিমের অফ স্পিনে বোল্ড প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে। ১১৫ রানে অষ্টম উইকেট হারানো ভারত এরপর শুধু ব্যবধানই কমিয়েছে। ভারতের কফিনে শেষ পেরেকটাও ঠুকেছেন বাংলাদেশ অধিনায়কই। চেতন শর্মাকে বাউন্ডারিতে ক্যাচ বানিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ রানে অলআউট হয় ভারতীয় যুব ক্রিকেট দল।

 

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে এই দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামেই স্বাগতিক আরব আমিরাতকে হারিয়ে যুব এশিয়া কাপ ক্রিকেটে প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছিল ভারতের যুবারা। ২০২১ সালের আসরেও ভারতের কাছে হেরেই সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে। সেই হারের হিসেব গত আসরেই ভারতকে বুঝিয়ে দিয়েছিল সেমি থেকে বিদায় করে। আর এবার পাঁচ বছর আগের ফাইনালে হারের চূড়ান্ত প্রতিশোধটা নিয়ে নিলো তরুণ টাইগাররা। টুর্নামেন্টের প্রথম ৯ আসরে একবারও শিরোপা জিততে না পারা বাংলাদেশ দুবাইতে টানা দ্বিতীয় শিরোপা।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯: ৪৯.১ ওভারে ১৯৮ (জাওয়াদ ২০, কালাম ১, আজিজুল ১৬, শিহাব ৪০, রিজান ৪৭, দেবাশিস ১, ফরিদ ৩৯, সামিউন ৪, আল ফাহাদ ১, মারুফ ১১*, ইমন ১; ইউধাজিত ৯.১.-১-২৯-২, চেতান ১-০-০-৪৮-২, নিখির ৫-১-১৩-০, কিরান ৭-০-১৯-১, হার্দিক ১০-০-৪১-২, কার্তিকেয়া ৭-০-৩৭-১, আয়ুশ ১-০-৯-১)।

ভারত অনূর্ধ্ব-১৯: ৩৫.২ ওভারে ১৩৯ (আয়ুশ ১, বৈভাব ৯, সিদ্ধার্থ ২০, কার্তিকেয়া ২১, আমান ২৬, নিখিল ০, হারভানশ ০, কিরান ১, হার্দিক ২৪, চেতান , ইউধাজিত ; মারুফ ৬-০-২৩-২, ফাহাদ ৮-০-২৩-১, রিয়াজ ৮-২-১৩-০, ইমন ৭-১-২৪-৪, সামিউন ৫-০-১৫-০, আজিজুল ২.২-১-৮-৩)।

ফল: বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ৫৬ রানে জয়ী। ম্যান ব দা ম্যাচ: ইকবাল হোসেন ইমন। ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: ইকবাল হোসেন ইমন।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.