নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম এলাকা সাহেব বাজার, জিরো পয়েন্ট, গণনপাড়া ও মালোপাড়া এলাকা। এসব এলাকার পরিচ্ছন্ন ফুটপাত আগে থেকেই দখলে। এসব ফুটপাতে মানুষ হাটতে পারে না। এখন এখন ফুটপাতের পাশাপাশি মুল সড়কের বেশীরভাগ এলাকা দখলে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। ফলে প্রশস্ত সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়েছে। এতে মানুষের বিড়ম্বনা বেড়েছে পদে পদে।
রাস্তার মাঝখানে চুলা বসিয়ে ভাজা হচ্ছে পেঁয়াজু-শিঙাড়া-পুরি। বিক্রি হচ্ছে আপেল, কমলাসহ নানা ধরনের ফল। রয়েছে কাপড় বিক্রির দোকান। রাস্তার প্রায় অর্ধেকজুড়ে বসেছে এসব দোকানপাট। ফলে গনকপাড়া দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ। হেটে চলাচলের সময় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পথচারীরাও।
গনকপাড়ার এ রাস্তা রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে উত্তর দিকে রাজশাহী প্রেসক্লাবের সামনে। এই রাস্তা দিয়ে সাহেব বাজারের মূল সড়কে উঠতে হয়। সম্প্রতি এই রাস্তায় হকারদের বসিয়েছে পুলিশ। প্রায় এক বছর ধরে এই রাস্তার অর্ধেক ব্যারিকেড দিয়ে পুলিশ একমুখী করে দিয়েছে। পুলিশের ব্যারিকেডের ভেতরেই বসেছে দেড় শতাধিক দোকানপাট।
এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীরা জানান, শহরের ফুটপাত তো প্রায় দখলে রয়েছে। এখানে রাস্তাও দখল করা হয়েছে। এতে এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এ জায়গায় দোকান বসানোর কারণে সৌন্দর্যও নষ্ট হয়েছে।
পথচারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ফুটপাত দিয়েও হাঁটা যায় না। রাস্তা দিয়েও হাঁটা যায় না। কিন্ত কে কিভাবে করবে এর প্রতিকার। তিনি বলেন সড়কের ওপর দোকান বসানো নিয়ে যেকোনো সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে।
রাজশাহী নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মূল রাস্তায় যানজট নিরসনে প্রায় এক বছর ধরে নগরের কয়েকটি এলাকায় রাস্তা একমুখী করা হয়েছে। এসব এলাকায় মূল সড়ক থেকে গাড়ি যেতে পারবে, কিন্তু গাড়ি ঢুকতে পারবে না। সাহেব বাজার এলাকায় রাস্তাটিও তাই করা হয়েছে। গত অক্টোবরের শেষে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের মূল রাস্তা ঘেঁষে থাকা দোকানপাট অভিযান চালিয়ে সরিয়ে রাস্তার উত্তর পাশে প্রেসক্লাবের সামনে আনা হয়। তখন তালিকা করে হকারদের বসানো হয় রাস্তার উত্তর পাশে প্রেসক্লাবের সামনে। তবে এক মাসের ব্যবধানে আরও অতিরিক্ত দোকান সেখানে বসেছে।
রাজশাহীর ওই এলাকায় ফুটপাতে কাপড় ব্যবসায়ীদের একটি সমিতি রয়েছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক হেলাল বলেন, আগে এখানে ফুটপাতের নিচে তাঁরা কাপড়ের ব্যবসা করতেন। চলাচলে মানুষের খুব বেশি অসুবিধা হতো না। টু ওয়ে (দ্বিমুখী) রাস্তাও ছিল। তবে এখন রাস্তার দক্ষিণ পাশ থেকে দোকানপাট এনে এখানে রাস্তার ওপর বসিয়েছে পুলিশ। ওই পার থেকে ৩৭টি দোকান দিয়েছিল। কিন্তু এখন ৬০-৭০টি দোকান হয়ে গেছে। নানা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে বড় ভাইদের এনে এখানে দোকান বসানো হচ্ছে।
রাজশাহী প্রেসক্লাবের সভাপতি স ম সাজু বলেন, পুলিশ প্রশাসনের কাছে তাঁদের অনুরোধ থাকবে, এই এলাকার ব্যবসায়ীদের যেন পুনর্বাসন করে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়। এতে এখানে যানজট কমে যাবে। মানুষের চলাচলে অসুবিধা হবে না।
রাজশাহী নগর পুলিশের কমিশনার আবু সুফিয়ান বলেন, জিরো পয়েন্টের মূল রাস্তার দক্ষিণ পাশে অস্থায়ীভাবে ব্যবসা করত তারা। এ কারণে ওই এলাকায় রাস্তায় যানজট থাকত। তাদের বলে রাস্তার উত্তর পাশে আনা হয়েছে। ওখানে নির্দিষ্টসংখ্যক ব্যবসায়ীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাঁদের তালিকাও রয়েছে। এর বাইরে কেউ সেখানে কোনো ধরনের দোকান বসাতে পারবেন না। তারা দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবেন।