নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজশাহী অঞ্চলে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে দিনব্যাপি নানা আয়োজনে পালন করেছে স্থানীয় প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। কর্মসূচির মধ্যে ছিলো বৃক্ষরোপণ, আলোচনা সভা, পুষ্পস্তবক অর্পন ও দোয়া মাহফিল।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, সকল বুদ্ধিজীবীর মূল লক্ষ্য ছিল শোষণ, বঞ্চনা ও বৈষম্যমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা সবাই সেই প্রত্যয়ে কাজ করে যাবো আজকের দিনে আমাদের এ কামনা থাকবে। মুক্তিযুদ্ধ-চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে, বিশেষকরে ১৪ ডিসেম্বরে পরিকল্পিতভাবে হানাদার বাহিনী কর্তৃক রায়ের বাজার, মিরপুর, মোহাম্মদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় জাতির যে সূর্য-সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল তাঁদের স্মরণেই শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। শুধু রাজশাহীতেই ৬১ জন বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছে এবং সারা বাংলাদেশে এ সংখ্যা ১ হাজার ১১১ জন।
জুলাই বিপ্লব প্রসঙ্গ টেনে বক্তারা বলেন, নতুন একটি দেশ গড়তে শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ যেভাবে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, জুলাই বিপ্লবে ছাত্ররাও সেভাবেই তাদের জীবন উৎসর্গ করেছিল। এসময় নতুন বাংলাদেশ গঠনে শিল্পী-সাহিত্যিকদের অবদান হিসেবে ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’ ও ‘কথা ক’ শীর্ষক গানের কথা উল্লেখ করেন বক্তারা।
বিএনপি
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দলটির রাজশাহী মহানগর কমিটির উদ্যোগে, নগরীর ভুবন মোহন পার্ক, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সন্ধা সাতটায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের রাজশাহী মহানগর আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা, অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা।বক্তব্য রাখেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক নজরুল হুদা, যুগ্ম আহবায়ক জয়নাল আবেদিন শিবলী, আসলাম সরকার, সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ। সভায় মহানগর বিএন পি সদস্য,দপ্তর সংযুক্ত আরিফুল শেখ বনি, বারো নং ওয়ার্ড আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসন
দিবসটি উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মো. আলমগীর রহমান, পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খোকা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ফ্রন্ট লাইনার আব্দুর রহীম, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
দিবসটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। এদিন ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে প্রশাসন ভবনসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত উত্তোলন করা হয়। সকাল ৮টায় উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীবসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান, কোষাধ্যক্ষ মো. মতিয়ার রহমান, সিন্ডিকেট সদস্য, অনুষদ অধিকর্তা, ইনস্টিটিউট পরিচালক, বিভাগীয় সভাপতি, প্রক্টর প্রফেসর মো. মাহবুবর রহমান, ছাত্র-উপদেষ্টা ড. মো. আমিরুল ইসলাম, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর মো. আখতার হোসেন মজুমদারসহ বিশিষ্ট শিক্ষক ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৯:১৫ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণ ও স্মারক প্রদান এবং আলোচনা সভা। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন কমিটির সভাপতি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে এই আয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শিক্ষক সুখরঞ্জন সমাদ্দারের স্ত্রী চম্পা সমাদ্দার স্মৃতিচারণ করেন। এতে আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী ও রাবি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর এম সাদেকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব ও বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর মোহা. ফরিদ উদ্দীন খান ও কোষাধ্যক্ষ মো. মতিয়ার রহমান বক্তৃতা প্রদান করেন। উপাচার্য শহীদ জায়াকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে আলোচক ও অতিথিবৃন্দ বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের প্রাক্কালে জাতির অত্যন্ত মেধাবী সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা অত্যন্ত বেদানাদায়ক ঘটনা। স্বাধীন একটি দেশের জন্য এই বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা হতে পারতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই বুদ্ধিজীবীরা যেমন মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে ও মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের ভূমিকা ছিল সাহসী। পরবর্তী সময়ে এই হীন হত্যাকাণ্ডের সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ অনুসন্ধান হয়নি। ফলে আজও অনেক কিছুতে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। এই অস্পষ্টতা দূর করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঠিক রূপায়ন প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধ কোনো দলবিশেষের নয়, বরং সমাজের সকল স্তরের জনমানুষের আশা-আকাক্সক্ষা বাস্তব রূপায়নের প্রয়াস।
প্রধান অতিথি উপাচার্য প্রফেসর সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড জাতির জন্য ছিল অপূরণীয় ক্ষতি। কিন্তু নির্মম এই হত্যাকাণ্ডসহ পারিপার্শ্বিক ঘটনাবলীর যে বয়ান এতোকাল আমরা পেয়েছি তা সর্বাংশে সত্যনিষ্ঠ ছিল না। ইতিহাসের সঠিক উপস্থাপনের জন্যই একান্ত প্রয়োজন এসব ঘটনাবলীর সুষ্ঠু অনুসন্ধ্যানের মাধ্যমে এর রহস্য উদ্ঘাটন করা। আমরা আমাদের যে ইতিহাস পেয়েছি তা খণ্ডিত ও সুবিধাভোগীদের জন্য লেখা। এসব ইতিহাসে আমরা জনমানুষের প্রত্যাশা ও ভূমিকার সঠিক উপস্থাপন পাইনা। আমাদের ইতিহাসের এই খণ্ডিত অবস্থা থেকে বেরিয়ে বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস বিনির্মাণ জরুরি, যাতে করে আগামী প্রজন্ম তাদের পূর্বপ্রজন্মের ঘটনাবলীর সঠিক চিত্র পায়। এজন্য প্রয়োজন সুযোগ-সুবিধার অন্বেষা থেকে বেরিয়ে সকলের অংশিদারীত্বের মাধ্যমে সত্যনিষ্ঠ সমাজ প্রতিষ্ঠা।
আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম সন্ধি ও রাউফু ইসলাম ইতু অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। দিবসের কর্মসূচিতে আরো ছিল বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত, সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা ও সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে নাটক এবং জুলাই বিপ্লবের স্মৃতি স্মারক, গ্রাফিতি ও পোস্টার প্রদর্শনী।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাড়াও ইনস্টিটিউট, বিভাগ, আবাসিক হল ও অন্যান্য সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নিজ নিজ কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালন করে।
রামেবি
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রামেবি) উদ্যোগে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে রামেবির অস্থায়ী কার্যালয়ে সূর্যদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. জাওয়াদুল হক। এরপর দুপুর ২টায় একটি বর্ণাঢ্য র্যালিসহকারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
আলোচনা সভায় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে উপাচার্য প্রফেসর ডা. মো. জাওয়াদুল হক বলেন, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে এদেশের শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এই পরিকল্পিত বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড শুধু বাংলার ইতিহাসে নয়, মানব সভ্যতার ইতিহাসেও জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড বলে বিবেচিত। তিনি বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করে একটি বৈসম্যহীন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে। এসময় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর ডা. মো. শাহ্ আলম, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মুহাম্মদ ইব্রাহীম কবীর, পিএস টু ভিসি (অ.দা.) মো. নাজমুল হোসাইন, সহকার রেজিস্ট্রার (অ.দা.) মো. রাসেদুল ইসলাম, সেকশন অফিসার মো. জামালউদ্দীন, শারমিন আক্তার, মো. শাহারিয়ার ইসলাম ও মো. শাকিল আহমেদসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
রাসিক
রাজশাহী সিটি করপোরেশন যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছে। সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিবসের সূচনা হয়। পুস্পস্তবক অর্পণ করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রশাসক ও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, এনডিসি।
এরপর রাসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর, কর্মকর্তাবৃন্দ ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথকভাবে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে সকল মসজিদ ও ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হয়।
পুস্পস্তবক অর্পণকালে রাসিকের সচিব মো. মোবারক হোসেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর সানাউল্লাহ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহমেদ আল মঈন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. এএফএম আঞ্জুমান আরা বেগম, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সালেহ মো. নুর-ই-সাঈদ, রাজস্ব কর্মকর্তা মো. সারওয়ার হোসেন, প্রধান কর নির্ধারক গোলাম রব্বানী, ট্যাক্সেশন কর্মকর্তা (কর) ইমতিয়াজ আহমেদ, ট্যাক্সেশন কর্মকর্তা (কর) মো. মহিউদ্দিন, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা সেলিম রেজা রঞ্জু, জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ফুড এন্ড স্যানিটেশন অফিসার শেখ আরিফুল হক, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা নিজামুল হোদা, সিসিডিও আজিজুর রহমান, নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. মতিউর রহমান, ভান্ডার কর্মকর্তা আহসানুল হাবিব খোকন, সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা রকিবুল হক তুহিন, মনিটরিং কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন মুন, মনিটরিং কর্মকর্তা শাহরিয়ার রহমান জিতু।
কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণকালে রাসিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকিল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো. সানারুল ইসলাম ছবি, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. মোফাজ্জল হোসেন মাকু, সাবেক সদস্য মো. সেকেন্দার আলী, মো. নাদিম, মো. সালাউদ্দিন, আতিকুর রহমান বাবু, মো. রাশিদ খাঁন, তপন, বিভিন্ন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ওয়ার্ডের সচিবগণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজ
দিবসের কর্মসুচি হিসেবে সকলের উপস্থিতিতে শহিদ মিনারে দেশের শ্রেষ্ঠসন্তান শহিদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর কলেজ অডিটরিয়ামে আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন. কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. জুবাইদা আয়েশা সিদ্দীকা। তিনি বলেন, এদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে এই দিনটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির পথ নির্দেশক। পাঁচ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যে স্বপ্ন দেখা হয়েছে সেটি বাস্তবে রূপ দিতে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা স্মরণ করতে হবে। আর এই কাজটি করতে হবে আগামী প্রজন্মকে।
অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, কলেজ উপাধ্যক্ষ প্রফেসর জেসমিন আকতার, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক ও শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন কমিটির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা। মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রত্যক্ষ করা ঘটনা ও নিজস্ব অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রফেসর সৈয়দা গুলশান ফেরদৌস। আলোচনায় অংশ নেন, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক অনুপ সরকার, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুল বারী, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান মাহমুদা আখতার জাহান। উপস্থাপনায় ছিলেন, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মতলেবুর রহমান সরদার।
রুয়েট
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৪ পালিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯ টায় রুয়েট প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর সকাল পৌনে ১০ টায় রুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহীদ ছাত্রদের কবর জিয়ারত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ১০ টায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচিসমূহে প্রধান অতিথি ছিলেন যন্ত্রকৌশল অনুষদের ডীন ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রোকনুজ্জামান।
দিবস উদযাপন কমিটির সভাপতি ও ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম সরকারের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আরিফ আহম্মদ চৌধুরী, বিভিন্ন অনুষদের ডীন, সকল পরিচালক, বিভাগীয় প্রধান, দপ্তর ও শাখা প্রধান, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ প্রমুখ।
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে সকালে রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন করেন বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পনের সময় উপস্থিত ছিলেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ড.আবুল কাশেম, বিএমডিএ সচিব এনামুল কাদির, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিন্নুরাইন খান, হিসাব নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) রোকনুজ্জামান বিশ্বাস, নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান প্রমুখ। বাদ যোহর বিএমডিএ মসজিদে শহিদদের আত্মার শান্তির কামনা করে বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
শাপলা
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা-শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার উদ্যোগে সকাল ১০টায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন করা হয়। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস উদযাপন উপলক্ষে সকাল ১০টায় সংস্থার প্রধান কার্যালয় হতে সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মহোদয়ের নেতৃত্বে স্টাফদের সমন্বয়ে একটি টিম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিষ্ঠিত শহিদ বুদ্ধিজীবী চত্ত্বরে র্যালি ও শহিদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সকাল ১১:৩০ মিনিটে রাজশাহীর সপুরাস্থ সংস্থার প্রধান কার্যালয় কনফারেন্স হলে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক জনাব মোহসিন আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার ফান্ড রেইজিং, এ্যাসেট এন্ড কমিউনিকেশন এর সহকারী পরিচালক জনাব মাহবুব হোসেন। সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শাপলা গ্রাম উন্নয়ন সংস্থার এইচআর এন্ড এডমিন এর সহকারী পরিচালক জনাব জাহাঙ্গীর আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শাপলা কালচারাল ম্যানেজার জনাব ইমরুল আসাদ। এছাড়া অনুষ্ঠানে সংস্থার ্প্রধান কার্যালয়সহ মাঠ পর্যায়ের উর্ধ্বতন স্টাফ, বিভিন্ন বিভাগ ও প্রকল্পের স্টাফ এবং মাঠ পর্যায়ের স্টাফগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্থানী হায়না তথা পাক হানাদার বাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনে এদেশের ঘাতক দালালদের সহায়তায় বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী তথা এদেশের সম্পদদের চিহ্নিত করে পরিকল্পিতভাবে পৈশাচিক নির্যাতনসহ নৃশংসভাবে হত্যা করে। এটি অত্যন্ত জঘন্যতম অপরাধ যা ক্ষমার অযোগ্য। পাশাপাশি ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে নরপিশাচদের হাতে নিহত শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দোয়া করে আয়োজনকৃত কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
রাজশাহী জেলা পরিষদ
যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ১৪ ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৪ পালন করেছে রাজশাহী জেলা পরিষদ। সকাল ১০ টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রাঙ্গণে শহিদ স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন রাজশাহী জেলা পরিষদ প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) তরফদার মো: আক্তার জামীল।
পুস্পস্তবক অর্পণকালে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মুঃ রেজা হাসান সহকারী প্রকৌশলী এ. কে. এম আনোয়ার হোসেন, প্রধান সহকারী এস. এম. আল মতিন, হিসাব রক্ষক খ. মু. মোস্তাফিজুর রহমান, উপ সহকারী প্রকৌশলী (অঃদাঃ) মো: আলেফ আলীসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
রাজশাহী কলেজ
ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজে শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে কলেজ শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী ও উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক প্রফেসর ড. মো. সেরাজ উদ্দীন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আকতার সারমিন, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. শিখা সরকার ও কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ। এরপর সকাল ১১.০০ টায় রাজশাহী কলেজ অডিটোরিয়ামে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী। কোরআন তেলায়াত ও গীতাপাঠের মাধ্যমে সভার কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহুর আলী বলেন- ‘শহিদ বুদ্ধিজীবীগণ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তিনি সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত শহিদদের আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন এবং ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের শহিদদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। উপাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ইব্রাহিম আলী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও স্বদেশপ্রেমের ভিত্তিকে সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মোসাঃ ইয়াসমিন আকতার সারমিন। এরপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. শিখা সরকার। প্রবন্ধ উপস্থাপক ১৯৭১ সালের শহিদ বুদ্ধিজীবীদের বর্ণাঢ্য জীবন ও আত্মত্যাগের বিস্তৃত পরিচয় তুলে ধরেন এবং শহিদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। উপস্থাপিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আব্দুল মতিন। তিনি রাজশাহী কলেজের ১২ জন শহিদ বুদ্ধিজীবীর পরিচয় প্রদান করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে তাঁদের অমূল্য অবদান শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
এরপর শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুর রকিব।
বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়
১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের হত্যা করে।
১৪ই ডিসেম্বর শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। সেই উপলক্ষ্যে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় সকাল ১০টায় বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস চত্বরে শোক র্যালি বের করে। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপাচার্য(ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা-এর নেতৃত্বে শোক র্যালিটি স্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক হতে যাত্রা শুরু করে চত্বরের উত্তর পাশে অবস্থিত অস্থায়ী স্মৃতিফলকে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। সে সময় শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে এক মিনিট নিরাবতা পালন করা হয়।
পুষ্পাঞ্জলী অর্পণ করেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য(ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. আনন্দ কুমার সাহা, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. ফয়জার রহমান, ইংরেজি বিভাগের প্রধান প্রফেসর মো. শহিদুর রহমান, সিএসই বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. খাদেমুল ইসলাম মোল্ল্যা, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. সিদ্দিকুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম ও রেজিস্ট্রার সুরঞ্জিত মন্ডলসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।