নিজস্ব প্রতিবেদক: টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে জুবায়েরপন্থী ও সাদপন্থীদের সংঘর্ষে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় রাজশাহীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে এ কর্মসূচি পালন করেন জুবায়েরপন্থীরা। এই সমাবেশ থেকে ইজতেমা ময়দানে সাদপন্থীদের চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবি জানান বক্তারা।
তারা বলেন, অর্র্ন্তবতীকালীন সরকারের উপর নানামুখী চাপ সৃষ্টি করার জন্য পতিত স্বৈরাচারের দোসররা একের পর এক ইস্যু সৃষ্টি করে ব্যর্থ হয়ে এবার তারা তাবলিগ জামাতের দ্বিধা বিভক্তিকে কাজে লাগিয়ে মাঠ গরম করতে চাইছেন। এ জন্য পরিকল্পিতভাবে সাদপন্থীরা গত ১৭ ডিসেম্বর ইজতেমা ময়দানে গভীর রাতে ঘুমন্ত মুসলিমদের উপর হামলা করেন।
বক্তারা বলেন, তাবলিগ জামাতের শত বছরের ইতিহাসে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও বাংলাদেশের বিগত আওয়ামী সরকার সাদপন্থী ও জুবায়েরপন্থীদের মতভেদ দূর করার বদলে আলাদা আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা করার সুযোগ দিয়ে বিরোধ জিঁইয়ে রাখতে মদদ দিয়েছিল। বিশ্ব ইজতেমার ময়দানে রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৮ সালে সাদপন্থীদের অতর্কিত হামলায় জুবায়েরপন্থীদের হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল।
এ কারণে সে বছর জনরোষের মুখে মাওলানা সাদ কান্দলভি টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে যেতে পারেননি। কাকরাইল মসজিদ থেকেই দিল্লীতে ফেরত যেতে হয়েছিল। সাদপন্থীদের প্রতি হাসিনা সরকারের পক্ষপাতিত্বের কারণে তাবলিগের সংখ্যাগরিষ্ঠ আলেম-ওলামাদের মতামত অগ্রাহ্য করে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
তারা বলেন, হাসিনা সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়, আনসার, রিকশাচালক, গার্মেন্ট শ্রমিকদের আন্দোলন এবং ইসকন ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসসহ নানা ইস্যুকে সামনে রেখে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি ও প্রতিবিপ্লবের যেসব অপতৎপরতা দেখা গেছে, তার সবগুলোর সাথেই নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের মুখোশধারী কর্মীদের অংশগ্রহণ ও যোগসাজশ দেখা গেছে। টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে রক্তাক্ত সংঘাত ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তাবলিগ জামাতের সাধারণ কর্মীদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাবলিগের সাদপন্থীদের সাথে মিশে ছাত্রলীগ-যুবলীগ কর্মীদের এসব অপকর্মে জড়িত বলেও তারা অভিযোগ করেন।
তারা বলেন, এই সংঘাতের জন্য অর্র্ন্তবতীকালীন সরকারের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী অনুচরদেরও দায়ী করেছেন কেউ কেউ। এরা ফ্যাসিবাদের দোসর। তারা আবার হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে। তাই সাদপন্থীদের চিরতরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। সমাবেশ থেকে ইজতেমা ময়দানে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত কওে দ্রুত গ্রেপ্তার এবং বিচার নিশ্চিত করারও দাবি জানান বক্তারা।
কর্মসূচিতে মাওলানা হোসাইন আহমেদ, মুফতি আব্দুল্লাহ আল কাফি, হাফেজ মাওলানা আতিকুর রহমান, মুর্শিদ আলম ফারুকী, হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ সাঈদ, মাওলানা আব্দুল মালেক, হাফেজ মাওলানা আবু তালহা, মাওলানা মো. জিয়াউল করিম, মুফতি নূর মোহাম্মদসহ প্রায় ৩০০ জন অংশ নেন।