প্রিয় রাজশাহী ডেস্ক: জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিততে ৫৪ বলে ৬ রান লাগত রংপুরের। হাতে ৫ উইকেট। স্পিনার রাকিবুলের দুই শর্ট বলে দুই চার মেরে এনামুল হক মিলিয়ে দেন সমীকরণ।
ফাইনাল ম্যাচ। শিরোপা নির্ধারণী লড়াই। টুর্নামেন্টের সেরা দুই দল আরেকবার মুখোমুখি। অথচ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে ম্যাচটা হলো একেবারেই উত্তাপহীন, ম্যাড়ম্যাড়ে। প্রতিদ্বন্দ্বীতাহীন ফাইনাল শেষে শেষ হাসিটা হেসেছে রংপুর বিভাগ।
ম্যাচের টার্গেটটা শুনলে সত্যিই অবাক হতে হবে। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকা মেট্রোর পুঁজি কেবল ৬২। ওই রান করতে নেমে রংপুর ৫ উইকেট হারালেও লক্ষ্য থেকে ছিটকে যায়নি। ৫২ বল হাতে রেখেই শিরোপার উন্মাদনায় মেতে উঠে রংপুরের খেলোয়াড়রা।
দুই দলের ব্যাটিংয়ে ছিল একই চিত্র। টপ ও মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানরা মেতে উঠে আসা-যাওয়ার মিছিলে। ঢাকা মেট্রো ১৬ রান তুলতে হারায় ৫ উইকেট। রংপুর ১৮ রানে ৪ উইকেট। সেখান থেকে আরিফুলের ও তানভীরের ২৪ রানের জুটি রংপুরকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন। স্পিনার রাকিবুলকে এক ছক্কা ও চার উড়ানোর পর আরিফুল ১৪ রানে সাজঘরে ফিরলেও তানভীর শেষ ম্যাচের মতো দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে আলিস আল ইসলামের তৃতীয় ওভারে ঢাকা মেট্রো জোড়া সাফল্য পায়। আব্দুল্লাহ আল মামুন স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ দেন। নাঈম কাটা পড়েন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। আবু হায়দার রনি নিজের প্রথম ওভার করতে এসে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রিজওয়ানকে। এরপর আকবর আলী তাহজিবুলের সরাসরি থ্রোতে গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ পান।
দ্রুত ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও রংপুরের শিরোপা হাতছাড়া হয়নি। টুর্নামেন্টের শেষ হাসিটা তারাই হেরেছে। এর আগে রাউন্ড রবিন লিগে তারা ঢাকা মেট্রোর কাছে তারা হেরেছিল। কিন্তু প্রথম কোয়ালিফায়ারের পর ফাইনাল ম্যাচ জিতে মধুর প্রতিশোধ নিল তারা।
রংপুরের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে ঢাকা মেট্রোর ইনিংসেও ছিল একই চিত্র। স্কোরবোর্ডে ১৬ রান হতেই ৫ ব্যাটসম্যান সাজঘরে। নতুন বলে দুই পেসারই ঢাকা মেট্রোর ইনিংসে ধস নামিয়েছেন। চার মেরে ইনিংস শুরু করা ইমরানুজ্জামান দ্বিতীয় বলে মুগ্ধকে উড়াতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ দেন। দ্বিতীয় ওভারে আলাউদ্দিন বাবুর বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাঈম শেখ।
মুগ্ধ তৃতীয় ওভারে ফিরে জোড়া সাফল্যে ভাসান রংপুরকে। আনিসুল ইসলামকে দারুণ ইনসুইংয়ে বোল্ড করার পর আমিনুল ইসলাম বিপ্লকে স্লিপে তালুবন্দি করান প্রথম বলে। মার্শাল আইয়ুবের পরিবর্তে সুযোগ পাওয়া তাহজিবুল ইসলাম পারেননি সুযোগ কাজে লাগাতে। আলাউদ্দিন বাবুর বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন সাজঘরে।
ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে মোসাদ্দেক ও শামসুর ১৭ রান যোগ করেন। কিন্তু মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলে ঢাকা মেট্রোর বড় ইনিংসের আশা শেষ হয়ে যায়। এরপর শুধু লেজের ব্যাটসম্যানদের লড়াই। সেই লড়াইয়ে আশা দেখিয়েছিলেন আবু হায়দার রনি। ৯ বলে ২ চারে করেছিলেন ১৩ রান। কিন্তু শহীদুলের সঙ্গে ভুল বোঝাঝিতে রান আউট হয়ে ফিরলে ঢাকা মেট্রোর শেষ আশাটুকুও শেষ হয়ে যায়। দলের আট ব্যাটসম্যান যেখানে দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছতে পারেনি সেখানে বড় পুঁজির আশাও করা যায় না।
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ ও আলাউদ্দিন বাবু ৩টি করে উইকেট নিয়ে ছিলেন রংপুরের সেরা। ১ উইকেট করে নেন রবিউল, রিজওয়ান ও আরিফ।
সাত বিভাগীয় দল ও ঢাকা মেট্রোকে নিয়ে লম্বা সময় পর আয়োজিত হলো জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টি। প্রতি বছর এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের প্রতিশ্রুতি মিলেছে। প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়ে রংপুর পেয়েছে ২০ লাখ টাকা। রানার্সআপ ঢাকা মেট্রো পেয়েছে ১০ লাখ টাকা।