নিজস্ব প্রতিবেদক: ছয়বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন শামসুন নাহার রুনা। শিক্ষক মতিউর রহমান চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে ক্লান্ত। মায়ের চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে একটি মুদি দোকান দিয়েছেন শামসুন নাহারের ছেলে মাহমুদুল হাসান অন্তর। সেই দোকানটিই দখলে নিতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে শামসুন নাহারের দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে রাজশাহী নগরীর দাসপুকুর মহল্লায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী শামসুন নাহার রাজপাড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের রাজশাহী জেলা শাখার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে কান্নায় ভেঙে পড়েন শামসুন নাহারের স্বামী মতিউর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, শামসুন নাহারের বড় ভাই রওসনুর রহমান রোকন ও শফিউর রহমান মামুন তার ভাগ্নে অন্তরের দোকানটি দখলে নিতে চান। এ জন্য হামলা চালিয়েছেন। হামলায় তার প্রায় ৭ লাখ টাকার ক্ষতি করেছেন। এছাড়া নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে শামসুন নাহার বলেন, বিরোধের সূত্রপাত ১১ বছর আগে। ৫ ভাই বোনদের মধ্যে আমার বাবা-মা আমাদের দুই বোনকে ১২ ছটাক করে একটি জমি লিখে দেন। আমার জীবিত বাবা-মায়ের নামে এখনো ৩ কাঠা জমি আছে যা আমার ৩ ভাই পাবেন। তবে সেই জমি দ্রুত লিখে নেওয়া এবং আমাদের দেওয়া জমি থেকে ১১ লাখ টাকা দাবি করেন রোকন। আমরা দুই বোন অযৌক্তিক সেই দাবি মেনে না নিলে আমার ভাই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
তিনি বলেন, শুধু ভাই বলে আমরা এতদিন চুপ ছিলাম। কিন্তু সে এতটাই নিচে নেমে গেছে যে নেশার টাকা জোগাড় করার জন্য দোকানে এসে চাঁদা দাবি করে। সম্প্রতি দুইদফায় ৭ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে গিয়ে টাকা দেয়নি। রোকন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। সে বিএনপির কোনো পদে না থাকলেও বিভিন্ন জায়গায় মহানগর বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক পদে থাকার পরিচয় দেয়। অথচ নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটিই নেই।
শামসুন নাহারের স্বামী মতিউর রহমান কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, আমার স্ত্রী ছয়বছর ধরে ক্যানসার বয়ে বেড়াচ্ছে। তার চিকিৎসায় আমরা সর্বস্বান্ত। চিকিৎসায় একটু সহায়তা করতে আমি শিক্ষক হয়েও আমার ছেলেকে মুদি দোকান করে দিয়েছি। আরেক ছেলে টিউশনি করে। আমি বিএনপি করেও আজ কেন নির্যাতিত হচ্ছি, সেটাই আমার এখন প্রশ্ন।
অভিযোগের বিষয়ে মোবাইলে কোন মন্তব্য করবেন না বলে জানিয়েছেন শামসুন নাহারের ভাই রওসনুর রহমান রোকন। নগর বিএনপির পদে না থাকলেও এই পরিচয় দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, আমি কী পদে আছি নিজেই জানি না। লোকজন বলে।
রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে নেই। এ রকম অভিযোগ থানায় দিয়ে গেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।