বুধবার | ১লা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রমজানে কোন পণ্যের ক্রাইসিস থাকবে না: ভোক্তা ডিজি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক (গ্রেড-১) মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেছেন, দেশে রমজানে কোন পণ্যের ক্রাইসিস (সঙ্কট) থাকবে না। এখন কথা হচ্ছে ক্রাইসিস না থাকলেও দ্রব্যমূল্য বাড়বে কি না? আমাদের যে শক্তি আছে, সেই শক্তি দিয়ে আমরা ভোক্তাদের কাছাকাছি মূল্য নেওয়ার জন্য সবসময় সচেষ্ট থাকি।

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে রাজশাহী বিভাগে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যক্রম শক্তিশালীকতরণ বিষয়ে বিভাগীয় ভোক্তা অধিকার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি সময়ে আমরা দুইটি বিষয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলাম। একটা হলো পেঁয়াজ। আর একটা হলো আলু। আমরা সাধারণভাবে দ্রব্যমূলাটা পেয়ে থাকি কৃষি বিপন্ন অধিদফতর থেকে। সেখান থেকে আমরা যেটা পেয়েছি, ২৭ টাকার মধ্যে কোল্ডস্টোজগুলোতে (হিমাগার) আলু রাখা হয়েছিল।

এর সঙ্গে কোল্ডস্টোজের ভাড়া, পরিবহন ইত্যাদি মিলিয়ে সর্বোচ্চ ৪০ টাকায় বিক্রি করলে এটা যৌক্তিক মূল্য বলা হচ্ছে। তারপরেও এটাকে আরও কিছু লাভ ধরে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা করে দিয়েছে কৃষি বিপন্ন অধিদফতর। সেই অনুযায়ী আমরা ঔ মূল্যে বিক্রির বিষয়ে আন্তরিক ছিলাম।

তিনি আরও বলেন, রংপুরের ময়নাকুটির কোল্ডস্টোরেজ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। রাজশাহীতে পবার ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ৪৫ টাকা দরে আলু বিক্রি করতে বাধ্য করেছেন। রাজশাহীতে ৪০টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। রাজশাহীর নয়টা উপজেলার মধ্যে একটি মাত্র উপজেলা এমন দামে আলু বিক্রি করতে পারলে, এটাকে আমরা অন্য উপজেলাগুলোর সঙ্গে এক কাতারে বিবেচনা করতে পারি না।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূলের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে এখনও পুরানো সংস্কৃতিটা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়নি। গত মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদে (স্থলবন্দর) গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখেছি পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধিতে যে আমদানি হচ্ছে তারমধ্যে ওয়ান থার্ড (তিনভাগের এক ভাগ) পেঁয়াজ নষ্ট। কিন্তু আমরা তখন পেঁয়াজের ক্রাইসিস (সঙ্কট) মেনটেন (রক্ষণাবেক্ষন) করা জন্য এই পেঁয়াজটাই কিনতে বাধ্য হচ্ছি।

এই কারণে পেঁয়াজ যে পরিমানের আমদানি করা হয়েছিল। পরে মূল্যর ক্ষেত্রে ১০০ মধ্যে ৩০ ভাগ নষ্টের পরেও বাকিটাকে ১০০ করে ধরে মূল্য হয়েছে। ফলে মূল্য কোনভাবে কমানো যায়নি। এই পেঁয়াগুলোর দুইটা অংশের মধ্যে একটা অংশ প্রায় ভেজা আসত। এগুলো আমাদের জনগণের জন্য কোনভাবেই পজিটিভ না।

তিনি আরও বলেন, অন্য দ্রব্যের ক্ষেত্রে দাম বাড়তির দিকে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রমজানকে সামনে রেখে ছোলা, চিনি, ভোজ্য তেল, খেজুরের ইউটি অনেক কমিয়ে দিয়েছে। কিছু কিছু পণ্যে প্রায় জিরোর কাছাকাছি ধরেছে। অনেকেই এলসি খুলেছেন, আমদানি করছেন।

রমজানে কোন পণ্যের ক্রাইসিস (সঙ্কট) থাকবে না। এখন কথা হচ্ছে ক্রাইসিস না থাকলেও দ্রব্যমূল্য বাড়বে কি না? আমাদের যে শক্তি আছে। সেই শক্তি দিয়ে আমরা ভোক্তাদের কাছাকাছি মূল্য নেওয়ার জন্য সবসময় সচেষ্ট থাকি। কিছু জিনিস আছে আমার এখতিয়ারের বাইরে।

সবকিছু যদি সঠিকভাবে চলে আমরা আশা করছি রমজানে ক্রাইসিসটা হবে। এছাড়া মাংসের মূল্য যৌক্তির মূল্যের বাইরে না যায় সেই বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সদস্যদের আপনারা সজাগ থাকতে বলেন তিনি।

ক্যাবের কেন্দ্রীয় সভাপতি জামিল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ আলমগীর রহমান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, উপ-পুলিশ কমিশনার মো. নাছির উদ্দীন জুবায়ের। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।#

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.