রাবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথম বর্ষ ভর্তিতে পোষ্য কোটার হার পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
তবে, পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনড় রয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন, রাআির সমন্বয়করা।
রাবির অন্যতম সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, এখনো প্রশাসনের কাছে ভাবার মত সময় রয়েছে। ১ শতাংশ কেনো, ০.১ শতাংশ পোষ্য কোটাও রাখা যাবেনা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের চেয়েও কয়েকগুন দরিদ্র মানুষ এই দেশে রয়েছে। কর্মচারীরা দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী না। আমাদের আরও দুইটি দাবি হলো- ফ্যাসিস্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের আওতায় আনা এবং দুইজন ফ্যাসিবাদী শিক্ষককে সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেওয়ার জন্য উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে উন্মুক্ত স্থানে কারণ দর্শাতে হবে। আমাদের দাবি না মানা হলে বৃহস্পতিবার সকাল দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে তালা দিবো আমরা।
এবিষয়ে কর্মচারীদের কোনো নেতার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাবি কর্মচারী সমিতির নির্বাচন না হওয়ায় কর্মচারীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ আলাদা আলাদা সংগঠন তৈরী করেছেন।
তবে কথা হয় রাবি অফিসার সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় আমরা আমাদের সমিতির জরুরি সভা ডেকেছি। সভার সিদ্ধান্তকে আমরা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।
তিনি আরও বলেন, আমরাও কোটা বিরোধী। আমাদের সন্তানরা কখনোই কোটা নিয়ে পড়ে নাই, ভবিষ্যতেও পড়বে না। কারণ এটা আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। বাংলাদেশের সকল ধরনের প্রতিষ্ঠানেই কর্মরত ব্যক্তিদের একটা প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বা, সুবিধা রয়েছে।
রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধিকার ওমর ফারুক সরকার বলেন, এবিষয়ে আমাদের সমিতির সদস্যরা মনে করলে সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করা হতে পারে। তবে, এবিষয়ে এখনো আমাদের কোনো সভা ডাকা হয়নি। সাধারণত আমাদের সভাপতি মিটিং কল করে থাকেন।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের বক্তব্য জানতে তাঁর মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর ভর্তি কমিটির সভায় পোষ্য কোটা ১ শতাংশ কমিয়ে ৩ শতাংশ এবং মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনি কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা বহাল রাখার প্রতিবাদ জানালে কোটা পর্যালোচনার জন্য উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ২০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, রাবির ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন আগামী ৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ১৬ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত চলবে। চূড়ান্ত আবেদন ২০ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত করা যাবে।
একই দিনে রাবি জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো আরেকটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাবিতে সম্প্রতি চারজন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়। এর মধ্যে দুইজনের ব্যাপারে বিতর্ক সৃষ্টি হওয়ায় তাঁরা দায়িত্বে যোগদান করেন নি। তারা হলেন- ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. তামজীদ হোসেন মোল্লা এবং চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজিয়া আফরিন।