স্নায়ুযুদ্ধের পর চাঁদ নিয়ে নতুন করে পৃথিবীর পরাশক্তিগুলোর দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা আর্টেমিস মিশনের অধীনে চাঁদে আবারও মানুষ পাঠানোর দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। এরই মধ্যে সফলভাবে চাঁদে মুনল্যান্ডার নামিয়েছে চীন। তারই ধারাবাহিকতায় এবার ভারতের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) তার বহুল প্রত্যাশিত চন্দ্রাভিযান ‘চন্দ্রযান-৩’ উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা করেছে।
ইসরোর কর্মকর্তারা বুধবার (২৮ জুন) এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিক থাকলে মিশন রকেট ‘জিএসএলভি মার্ক-৩ হেভি-লিফট লঞ্চ ভেহিকল’ শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ১৩ জুলাই স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হবে।
এবারের মিশনের বাজেট ৬১৫ কোটি ভারতীয় রুপি।
ভারতের মহাকাশ অগ্রযাত্রায় এর আগে সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মিশন ছিল ‘চন্দ্রযান-২’। সফল উৎক্ষেপণ ও চাঁদের নিকট কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে সক্ষম হলেও ল্যান্ডারটি সঠিকভাবে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে চাঁদের মাটিতেই মিশনে পাঠানো রোভার বিধ্বস্ত হয়। এই তিক্ত অভিজ্ঞতার মধ্যে এটিও ভারতের জন্য একটি সফলতাই। কারণ এর মাধ্যমে চাঁদে প্রথম কোনো বস্তু পাঠাতে সক্ষম হয়েছিল দেশটি।
গত ব্যর্থতার ইতিহাস ভুলে ইসরোর কর্মকর্তারা এবারের চন্দ্রযান-৩ মিশন নিয়ে খুবই আশাবাদি। তারা আশা করছেন, এবারের অভিযানে সফলভাবে রোবোটিক রোভার চাঁদের বুকে নামাতে সক্ষম হবেন তারা। এবার মিশনের ঝুঁকি কমাতে ও চন্দ্রযান-৩ কঠোর পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে দিয়ে গেছে। পূর্বের ব্যর্থতা থেকে লব্ধ জ্ঞানকে এবারের মিশনে ব্যবহার করা হয়েছে।
ইসরোর চন্দ্রযান-৩ মিশনের তিনটি প্রাথমিক রূপরেখা রয়েছে। চাঁদে রোভারকে নিরাপদে অবতরণ করার সক্ষমতা অর্জন করা, চন্দ্রপৃষ্ঠে রোভারের সক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা এবং চাঁদের গঠন বোঝার জন্য চন্দ্রপৃষ্ঠের রাসায়নিক ও প্রাকৃতিক উপাদান নিয়ে গবেষণা করা -একই সঙ্গে পানির অনুসন্ধান করা।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, মিশনটি শুধু ভারতের জন্য নয়, বৈশ্বিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ। এর মিশনে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে মানুষের চন্দ্রাভিযানের উদ্যোগকে আরও জোরালো করবে।