প্রিয় রাজশাহী ডেস্কঃ উন্নত চিকিৎসার জন্য আজ মঙ্গলবার রাতে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার এই বিদেশযাত্রা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গুলশান বাসভবন ফিরোজার সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। সেই সঙ্গে তার বাসভবনের সামনে হচ্ছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এছাড়া বাসভবনের আশপাশের সড়কগুলোতেও দলটির নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ফিরোজার সামনের রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। সেই সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের সংখ্যাও গত দিনের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিমানবন্দর থানার ওসি তাসলিমা আক্তার জানান, ১০ প্লাটুন পুলিশ থাকবে। এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বেবিচকের এ্যাফসেক বাহিনীসহ সোয়াটের মতো স্পেশাল টিমও থাকছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া জানান, বিমানবন্দরে নিরাপত্তাজনিত কোনো সমস্যা যাতে না হয়, সে লক্ষ্যে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরে প্রবেশে কড়াকড়ি থাকবে।
জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপির নির্দেশনা
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জনদুর্ভোগ এড়াতে নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) বিএনপি এবং সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীকে সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হলো, যাতে রাস্তায় যানবাহন ও পথচারী চলাচলে কোনো বিঘ্ন না ঘটে।
এর আগে বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে মঙ্গলবার রাত ১০টায় কাতারের আমিরের পাঠানো বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তিনি ঢাকা ছেড়ে যাবেন। যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর সরাসরি তাকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি করা হবে। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসার পর যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় হসপিটালে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নেওয়ার কথা রয়েছে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে পরের দুই বছর দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে তিনি পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কারাগারে একাকী কাটান। নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হলেও পরের চার বছরের বেশি সময় হাসপাতালে কাটে নানা রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার। বারবার আবেদনেও আওয়ামী লীগ সরকার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়নি। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে সর্বশেষ তিনি বিদেশ যান।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পরের দিনই তার সাজা মওকুফ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে নিজেকে নির্দোষ দাবি করা খালেদা জিয়া আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। এক মামলায় খালাস পেয়েছেন। অন্যটিতে তার সাজা স্থগিত হয়েছে আপিল বিভাগে। এর মাধ্যমে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যোগ্য হয়েছেন তিনি। সূত্রঃ সমকাল