নিজস্ব প্রতিবেদক: এখনও মানসিক দাসত্ব থেকে সাংবাদিকদের মুক্তি মেলেনি। বর্তমান ক্ষমতাকে প্রশ্ন করা কিংবা বর্তমান রাজনৈতিক দল ও সমন্বয়কদের কোনো অনিয়ম বা অন্যায় তুলে ধরা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকরা। ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাংবাদিকতা: সংস্কার ও সম্ভাবনায় করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনায় সাংবাদিকেরা এমন কথা বলেছেন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রাজশাহীতে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে নগরীর একটি রেস্তোরাঁর কনফারেন্স হলে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘দৃক’। সাংবাদিকতায় ভয়ের সংস্কৃতি ও সেলফ সেন্সরশিপের বাস্তবতা এখনও একইভাবে বহাল রয়েছে বলে মনে করেন সাংবাদিকেরা।
সভায় সাংবাদিকেরা বলেছেন, দীর্ঘদিন দেশে সত্যিকার অর্থে সাংবাদিকতা না থাকায় মাঠে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিভিন্ন পক্ষের হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা। সাংবাদিকদের ওপর টার্গেটেড আক্রমণ ঠেকাতে প্রতিষ্ঠানের পরিচয় লুকিয়ে, এমনকি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট খুলেও কাজ করতে হয়েছে।
সাংবাদিকরা বলেন, সংবাদমাধ্যমগুলোতে যে সংকটময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে এতে আমূল সংস্কারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। রাষ্ট্র ও সরকারের গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠিত না হলে আলাদা করে সংবাদমাধ্যমের সংস্কার সম্ভব নয়।
সাংবাদিকরা বিভিন্ন নামধারী সাংবাদিক সংগঠন ও এদের লেজুড়বৃত্তিক নেতৃত্ব নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলপন্থী নেতৃত্বের সমালোচনা করে তারা বলেন, এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরেও যদি সাংবাদিকরা দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ না হতে পারেন তাহলে সাংবাদিকতার সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করা যাবে না।
সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা, নিরাপত্তা, সম্মান ও মর্যাদা নিশ্চিত করা না গেলে সততা ও বিবেকের সাথে সাংবাদিকতা কখনও সম্ভব নয় বলেই মত তাদের। সবমিলিয়ে গণমানুষের আস্থা অর্জনে সাংবাদিকতার সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন রাজশাহীর সাংবাদিকরা।
সাংবাদিক ও গবেষক সামিয়া রহমান প্রিমা এই মতবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন। সভায় ঢাকা ও রাজশাহী থেকে প্রকাশিত পত্রিকা, টেলিভিশন ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিকেরা অংশগ্রহণ করেন।