মঙ্গলবার | ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নাটোরে ৩৮টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি

 

নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে। একই সঙ্গে ৯৬ শতাংশ মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয় না, মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা ফি প্রদান করে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে অল্প সময়ে, অল্প খরচে সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব।

নাটোর জেলায় ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৮টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান আছে, অবশিষ্ট ১৪টি ইউনিয়নে অতি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আদালতের কার্যক্রম গতিশীল করতে জেলায় অংশীজনদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এতথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।

সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শামীম হোসেন। তিনি বলেন, গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী অনাধিক তিন লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সব ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত কাজ করছে। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয় না, মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা ফি প্রদান করে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে অল্প সময়ে, অল্প খরচে সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব। মাত্র ১০ টাকা ফি দিয়ে ফৌজদারি ক্ষেত্রে চুরি, দাঙ্গা, প্রতারণা, ঝগড়া বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও আটক, ভয়ভীতি বা হুমকি দেওয়া এবং কোনো নারীকে অমর্যাদা বা অসম্মান করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত কাজ করে।

এছাড়া ২০ টাকা ফি প্রদান করে পাওনা টাকা আদায়, স্থাবর সম্পত্তি দখল থেকে উদ্ধার, অস্থাবর সম্পত্তি উদ্ধার বা তার মূল্য আদায়, কোনো অস্থাবর সম্পত্তি জবর দখল বা ক্ষতি করার জন্যে ক্ষতিপূরণ আদায়, গবাদিপশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ, কৃষি শ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় নিষ্পত্তি করে গ্রাম আদালত। মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে গ্রাম আদালতে।

সভায় উপ পরিচালক আরও বলেন, ইউএনডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং ৯৬ শতাংশ মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক কার্যক্রমে সন্তুষ্ট। জেলায় ৫২টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৮টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান আছে, অবশিষ্ট ১৪টি ইউনিয়নে অতি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম প্রশংসিত। এই আদালতের সুফল পেতে প্রচারণার মাধ্যমে আদালতকে আরও সক্রিয় করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আলো’র নির্বাহী পরিচালক শামীমা লাইজু নীলা, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজী আহম্মদ রফিক বাবন প্রমুখ।

উল্লেখ্য স্থায়ী সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন পাস হয়। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ইউএনডিপি এবং বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের (২য় পর্যায়) কার্যক্রম শুরু হয়।

 

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.