৭ জুন ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবস উপলক্ষে রাজশাহী জেলা পরিষদের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৭জুন) ঐতিহাসিক ছয় দফা দিবসের আলোচনা সভায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য এবং রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভপতি ও রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল বলেন, ছয় দফা ছিল বাংলাদেশের মুক্তির সনদ।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগষ্ট দ্বিজাতি তত্তের ভিত্তিতে পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার পর পূর্ব বাংলার সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের কোন কিছুতেই মিল ছিলনা। তারপরও জোর করে চাপিয়ে দেওয়াটা বঙ্গবন্ধু কোন দিনই মেনে নেন নাই। এরপর ধাপে ধাপে আন্দোলন এবং ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ২১শে ফেব্রুয়ারী বাংলা ভাষার স্বীকৃতি আদায় করে নেয়। ভাষার স্বীকৃতি আদায়ের পর পাকিস্তান ও আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশ বলেছিল বঙ্গবন্ধু ভারতের গুপ্তচর সিআইএ‘র দালাল।
এসব কথা আমলে না নিয়ে এই ছয় দফা বাংলার মুক্তির সনদকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ধিরে ধিরে এগোতে থাকেন এবং এই ছয় দফা দাবি নিয়ে প্রথম ছাত্রলীগ মাঠে নামে। এই আন্দোলনের ফলে ১৯৬৬ সালে বাংলার মানুষ এমন ভাবে ঝাপিয়ে পরেছিল যে এই ছয় দফা আন্দোলন থেকে এক দফা স্বাধীনতার আন্দোলনের রূপ নেয়।
রাজশাহীতে ১৯৬৯ সালে ১৮ ফেব্রুয়ারী ড. জোহা ও নুরুল ইসলামর সহ সারা দেশে রক্ত ঝরার পরে আইয়ুব খাঁনের গদি টলমলে হয়ে গেলে তিনি ইয়াহিয়া খাঁনের হাতে ক্ষমতা দিয়ে পালিয়ে যায়। এর পর ইয়াহিয়া খাঁন বলেন, আমি গণভোট দিবো। ছয় দফা দাবির ফলেই ১৯৭০ সালের গণভোট বঙ্গবন্ধু আদায় করে নিয়েছিল। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের নির্বাচনে জয়লাভ করলেও পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা না হস্তান্তর করলে ১৯৭১ সালের ১মার্চে স্বাধীনতার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পরে বাঙ্গালীজাতি।
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি বাঙ্গালীজাতিকে সব কিছু বলে দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম বাঙ্গালীজাতির মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। আজকে আমরা সেই বঙ্গবন্ধুর দেশে বাস করছি। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পরও শত্রুরা বঙ্গবন্ধুর পিছন ছাড়েনি। তাই ১৯৭৫ সালে ১৫ আগষ্ট স্বপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে আবারো পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল।
১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা না করলে বাংলাদেশের উন্নয়ন আজ কোথায় পৌছাতো তা আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। আজ বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে আমাদের দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চলেছেন।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য-৭ ( পুঠিয়া) মো: আসাদুজ্জামান মাসুদ, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু: রেজা হাসান, সহকারী প্রকৌশলী এজাজুল আলম, উপ সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, প্রধান হিসাবরক্ষক আব্দুল মতিন, সার্ভেয়ার আলিফ আলী সহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।