শুক্রবার | ১৭ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহাল না হলে জরুরি পরিষেবা বন্ধের হুঁশিয়ারি

 

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবার (১৬ জানুারি) সকাল ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনে দিনব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এসময় দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে পরীক্ষা, পরিবহনসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে দ্বিতীয় বারের মত কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। টানা কর্মবিরতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রায় সব ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। শুধু জরুরি পরিষেবা বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, পানি, পরিবহন ও নিরাপত্তাপ্রহরী শাখায় কর্মরতরা ব্যক্তিরা দায়িত্ব পালন করছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন, আবাসিক হল ও বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ অফিসকক্ষের তালা খোলা হয়নি। কিছু কিছু কক্ষের দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দেখা যায়নি। প্রশাসন ভবনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সনদ শাখা পুরোপুরি বন্ধ আছে। ফলে জরুরি কাজে নম্বরপত্র বা সার্টিফিকেট উত্তোলন করতে আসা শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন।

বৃহস্পতিবার কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, তারা সব ধরনের অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে তারাও আন্দোলন করেছেন। ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সন্তানেরা যে সুবিধা পেতেন, সেটি কোনো কোটা নয়—এটি তাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার। এ দাবিতে তাদের এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন। অন্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার বহাল আছে। তারাও এ সুবিধা ফেরত চান। তাদের ন্যায্য দাবি আদায় না হলে ভবিষ্যতে পরীক্ষা ও পরিবহনসহ জরুরি পরিষেবা বন্ধ করে দিয়ে অসহযোগ আন্দোলনে যাবেন।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতির দফতর সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন বলেন, আজকে (বৃহস্পতিবার) পূর্ণদিবস কর্মবিরতির মাধ্যমে আমাদের চলতি সপ্তাহের কর্মসূচি শেষ হবে। আগামী রবিবার (১৮ জানুয়ারি) কর্মকর্তা-কর্মচারী নেতারা আলোচনায় বসে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ১ জানুয়ারি রাবির ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য বরাদ্দ পোষ্য কোটা পুরোপুরি বাতিল করে শুধু সহায়ক ও সাধারণ কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ কোটা রাখার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণভাবে বাতিলের দাবিতে পরদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন কিছু শিক্ষার্থী। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ-উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দফতরের প্রশাসকসহ দুই শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর তারা অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই রাতেই পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল বলে ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব।

এ ঘোষণার সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামেন। তারা মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট ও পূর্ণদিবস কর্মবিরতিসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। একই দাবিতে বুধবারও পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media



© 2023 priyorajshahi.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.