রাজশাহীতে বিএনপির কর্মীদের বিরুদ্ধে তিন বিঘা জমি দখল নিয়ে প্লট করে বিক্রির অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন কলেছেন ভুক্তভোগী একটি পরিবার।
আজ সোমবার দুপুর ১২টায় রাজশাহী ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ভুক্তভোগী পরিবার এই দাবি করেন।
লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী জানান, আমি মো: জুলহাস উদ্দিন (৪৬), সাং- বড়বনগ্রাম কুচপাড়া, থানা- শাহমুখদুম, জেলা- রাজশাহী। আমার বাবা মৃত মুসলেম উদ্দিন দলিল মোতাবেক ১৯৭৮ সালে মৌজা নং-৮২, খতিয়ান নং-১, আরএস-১, সাবেক দাগ-৩০১৭ হাল দাগ ৩৬৯০ সরকার কর্তৃক এককালীন লিজ হিসেবে ১০৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয় করার পর যাবতীয় খাজনা খারিজ ২০০০ সাল পর্যন্ত বাবার নামে পরিশোধ করা হয়। বাবা মারা যাবার পর উত্তরাধিকার সূত্রে জমিটি ৩ ভাই ও ২ বোনের সম্মতিক্রমে আমি মো: জুলহাস উদ্দিন ৪০ শতক জমিতে বাঁশবাগান এবং বাকী গুলো ফসলি জমি হিসেবে ব্যবহার করে আসছি। এর মাধ্যমে অর্জিত অর্থ আমরা ৫ ভাই বোন সমান ভাবে ব্যবহার করি এবং এর থেকেই আমাদের ৫টি সংসার চলে।
গত ৫ই আগষ্ট বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসের ২০ তারিখ আমার মোবাইল নাম্বারে পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বপরিচিত আমজাদ ও তার ভাই আজাদ ফোন দিয়ে দেখা করতে বলে। এরপর জিয়া পার্কের পাশে একটি বিএনপির কার্যালয়ে আমাকে নিয়ে গিয়ে জমি থেকে গাছ, বাশ ও ফসল কেটে ফেলতে বলে। অন্যথায় এর ব্যার্তয় ঘটলে আমার ও আমার পরিবারের ক্ষতি হবে এমন হুমকি প্রদান করে এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাদের কথা মতো জমিটি থেকে আমাদের দখলমুক্ত করারা আল্টিমেটাম দেয়। তারা আমাকে আরো বলে, বিএনপি এখন ক্ষমতায় এসেছে তাই জমিটি আপনাকে ছেড়ে দিতে হবে।
আমি বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ না নিলে তারা সন্ত্রাসী বাহিনী সহ আমার জমিতে গিয়ে সকল গাছ কেটে দেয়। এতে যে তারা আমার জমির উপর দখল নিয়েছে শুধু তাই নয় বরং জমিতে থাকা আনুমানিক ৯ থেকে ১০ লক্ষ টাকার বাঁশ, কলাসহ বিভিন্ন ফসলের গাছ কেটে ফেলে। ২২ তারিখ এঘটনা শোনার পর আমি ২৩ তারিখ রাজশাহী শাহমুখদুম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। তবে, থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা অভিযোগটির বিষয়ে অন্যকোথাও সাহায্য নিতে বলে। এরপর আমি রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি ফৌজদারী মামলা দায়ের করি। যার মামলা নং- ১১৩১। এঘটনায় ২৪ তারিখ কোট ১৪৫ ধারা বলবৎ করে জমিটির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেও জমিতে কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। পরে লোক মারফত আমরা জানতে পারি জমিটি প্লট আকারে বিক্রির প্রস্তুতি চলছে এবং জাল জালিয়াতির মাধ্যমে একধিক মানুষের কাছে বিক্রিও করেছে তারা।
এঘটনায় আমিও আমার পরিবার আতংকিত এবং অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েছি। এমন পরিস্তিতিতে আইন আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে আমি ক্লান্ত। আমি কোথাও আমার ন্যায় বিচার পাচ্ছি না। আমার বাবার জমির সকল দলিলি প্রমান থাকার পরও আমি প্রতারণা ও সন্ত্রাসের শিকার। বৈষম্যহীন এই রাষ্ট্র নির্মানে আমি ও আমার পরিবার সম্মুখে থেকে আন্দোলনে কাজ করেছি। কিন্তু আজ আমি ও আমার পরিবার এখন বৈষম্যের শিকার। শেষ আশ্রয় ও সমাধান খুঁজতে দেশের চতুর্থস্থম্ভ সাংবাদিকদের সামনে আজ নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালাম। দেশবাসী ও বর্তমান সরকারের মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আমার পরিবারের প্রতি অন্যায়, অবিচার, সন্ত্রাসীবাহিনীর কড়াল গ্রাস থেকে আমাকে রক্ষা করুন।